দৈনিক গৌড় বাংলা

সোমবার, ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

অনন্য কীর্তি গড়লেন মেসি

স্টেডিয়ামের সাড়ে ৬৫ হাজার দর্শকের অনেকে তখনও থিতু হয়ে বসেননি। এর মধ্যেই ঘরের দলের গোল। দর্শকেরা উত্তাল। ধারাভাষ্যকারের চিৎকার, “স্বপ্নের মতো শুরু নিউ ইংল্যান্ডেরৃ।” কিন্তু প্রতিপক্ষ দলে যখন একজন লিওনেল মেসি থাকেন, দুঃস্বপ্নরা তো আনাগোণা করতেই থাকে সর্বক্ষণ! সেটিই হলো পরে। জোড়া গোল করে ইতিহাস গড়া এক কীর্তি গড়লেন মেসি। ইন্টার মায়ামির সামনে শেষ পর্যন্ত পাত্তাই পেল না নিউ ইংল্যান্ড। মেজর লিগ সকারের ম্যাচে বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে নিউ ইংল্যান্ডকে তাদের মাঠেই ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেয় ইন্টার মায়ামি। দলের সবকটি গোলেই অবদান রাখেন মেসি। দুই গোল করে চলতি মৌসুমের গোল স্কোরারদের তালিকায় নিজেকে সবার ওপরে তুলে নেন মেসি। লিগে ৭ ম্যাচ খেলে তার গোল এখন ৯টি।

তবে আরও বড় এক কীর্তিতে তার নাম খোদাই হয়ে যায় এই ম্যাচ দিয়ে। এই নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে একাধিক গোলে অবদান রাখলেন মেসি। মেজর লিগ সকারের ইতিহাসে এমন কিছু আগে করতে পারেননি আর কোনো ফুটবলার। মায়ামির বাকি দুটি গোল করেন বেঞ্জামিন ক্রেমাস্কি ও লুইস সুয়ারেস। সেই দুই গোলেও ছিল মেসির ছোঁয়া। ঘরের মাঠে ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার পরপরই এগিয়ে যায় নিউ ইংল্যান্ড। মায়ামির নিকোলাস ফ্রেইরির বাড়িয়ে দেওয়া বল ছুটে এসে নিয়ন্ত্রণে নেন নিউ ইংল্যান্ডের কার্লেস জিল। এরপর প্রতিপক্ষের দুজনের মাঝ থেকে চোখধাঁধানো লবে বল বাড়িয়ে দেন তিনি সামনে। বল ঢুকে যায় মায়ামির বক্সের ডান দিকে। সেটিকেই দুর্দান্ত এক গোলে পরিণত করেন তমাস শনকালায়। মায়ামির দুই ডিফেন্ডারকে ছিটকে দ্রুতগতিতে ছুটে গিয়ে তিনি দুরূহ কোণ থেকে বল জালে পাঠিয়ে দেন আগুয়ান গোলকিপার ডেরেক ক্যালেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে। ঘড়ির কাটায় সময় তখন ৩৭ সেকেন্ড। মেসির গোলে মায়ামি সমতায় ফেরে ৩২তম মিনিটে। প্রতিপক্ষের একজনকে এড়িয়ে আরও দুজনের মাঝ দিয়ে রবার্ট টেইলর বক্সের ভেতর চমৎকার পাস দেন মেসিকে। বাঁ পায়ের শটে বল জালে জড়ান মায়ামি অধিনায়ক। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ সমতায়। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় মায়ামি। ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে ভাইরাসের আক্রমণে কাবু নিউ ইংল্যান্ড ফুটবলাররা মাঠেও ক্লান্ত হয়ে পড়ে কিছুটা। মায়ামি এগিয়ে যায় ৬৭তম মিনিটে। সেই গোলের মূল কৃতিত্ব সের্হিও বুসকেতসের।

নিউ ইংল্যান্ডের বক্সের বেশ বাইরে থেকে অসাধারণ এক থ্রু বল দেন তিনি। বার্সেলোনার সাবেক সতীর্থের সঙ্গে মেসির যোগাযোগটা ছিল নিখুঁত। নিউ ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগ চোখের পলকে দেখতে পায়, বক্সের ভেতর ফাঁকায় বল পেয়ে গেছেন মেসি। কাছ থেকে বল জালে পাঠাতে কোনো সমস্যাই হয়নি তার। ৮৩তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করতে পারতেন মেসি। বাঁ দিক থেকে দারুণভাবে বক্সে ঢুকে পাস দেন মাতিয়াস রোহাস। ফাঁকায় থাকা মেসি খুব কাছ থেকে জোরাল শট নেন। দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে তা ফিরিয়ে দেন নিউ ইংল্যান্ড গোলকিপার। কিন্তু ফিরতি বল অনায়াসেই জালে পাঠিয়ে দেন ক্রেমাস্কি। পাঁচ মিনিট পরই সুয়ারেসের গোল। ম্যাচের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন গোল এটিই। অবদান সেখানেও মেসির। বক্সের মাথায় আলতো করে বল দেন তিনি সুয়ারেসকে। উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড বল ধরে প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকজনকে হতভম্ব করে শট নিয়ে নেন। ফুল লেংথ ডাইভ দিয়েও তা ঠেকাতে পারেননি গোলকিপার। লিগে সুয়ারেসের সপ্তম গোল এটি। এই জয়ে ১১ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে মেজর লিগ সকারের ইস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে মায়ামি। ১০ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সিনসিনাতি, ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তিনে নিউ ইয়র্ক রেড বুলস। পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে মায়ামিকে সামলাতে হবে রেড বুলসের চ্যালেঞ্জ।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *