৪২ লাখ টাকা শুধু সম্মানের চেষ্টা!!

34

দেড় যুগ ধরে মাঠের ভেতরে-বাইরে মাশরাফি বিন মুর্তজার অসংখ্য লড়াইয়ের স্বাক্ষী ব্রেসলেট, এটিকে কী টাকার অঙ্কে ধারণ না করা যায়! নিলামে এই ব্রেসলেট কিনে নেওয়া সংগঠন বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান মমিন ইউ ইসলাম বলছেন, ‘অমূল্য’ এই স্মারক তারা চড়া মূল্যে কিনেছেন মাশরাফির প্রতি সম্মান জানাতেই। কোভিড-১৯ রোগের প্রকোপের এই দুঃসময়ে অসহায় মানুষের সহায়তার জন্য প্রিয় ব্রেসলেটটি নিলামে তুলেছিলেন মাশরাফি, নিজের ভাষায় যেটি তার ‘১৮ বছরের সুখ-দুঃখের সাথী।’ ৫ লাখ ভিত্তিমূল্যের নিলামে সেটি বিক্রি হয়েছে ৪২ লাখ টাকায়। চোখধাঁধানো এই অঙ্কে ব্রেসলেটটি কিনেছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিএলএফসিএ। নিলামে সর্বোচ্চ দর ছিল ৪০ লাখ টাকা। পাশাপাশি, নিলাম আয়োজনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি যোগ করেছে আরও ৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। তবে মাশরাফির ‘বিশালত্বের’ কাছে বড় অঙ্কের এই অর্থকেও খুব বড় করে দেখছেন না বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান ও আইপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিন ইউ ইসলাম। নিলাম আয়োজনের ফেইসবুক লাইভে তিনি বলেন, এটি দেশের প্রতি মাশরাফির অবদানের সামান্য প্রতিদান। “ আপনি এই দেশকে যে সম্মান এনে দিয়েছেন, সেই সম্মানের প্রতিদান আসলে কোনোভাবেই হয় না। কিন্তু এটুকু করে আমরা চেষ্টা করেছি, আপনাকে কিছুটা হলেও সম্মান জানাতে। নিলামের খবর জানতে পেরেই আমি এই সংগঠনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিইওদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই একবাক্যে বলেছেন, যদি ভালো কাজে এই অর্থ ব্যয় হয় এবং আর্থিক খাত থেকে যদি বাংলাদেশের অধিনায়ককে সম্মান জানানো যায়, এর চেয়ে ভালো কিছু হয় না।” “ মাশরাফির এই স্মারকটি আসলে অমূল্য, কোনো মূল্য হয় না। তার পরও আমরা খুশি যে এই টাকায় ব্রেসলেটটি নিতে পেরেছি।” মমিন ইউ ইসলাম যখন এই কথা বলছেন, মাশরাফি তখন হাত থেকে ব্রেসলেট খুলে তুলে ধরে হাসি মুখে বলছিলেন, “এই যে, খুলে ফেলেছি। এটা আপনাদের, এখন আমার হাত খালি।” মমিন ইউ ইসলাম তখন উপহার দেন আরেকটি বড় চমক। “এই ব্রেসলেট ১৮ বছর ধরে আপনার সঙ্গে আছে, এটি আপনার হাতেই মানায়। আমরা এই ব্রেসলেট আপনাকেই উপহার দিতে চাই।” মাশরাফি তখন অবিশ্বাস ও ভালোলাগায় দুই হাতে ঢেকে ফেলেন নিজের মুখ। তার প্রাণখোলা হাসিতেই যেন ফুটে উঠছিল মনের অনুভূতি। মমিন ইউ ইসলাম পরে জানান, সামনেই একটি আয়োজন করে ব্রেসলেটটি আবার পরিয়ে দেওয়া হবে মাশরাফির হাতে। নিলাম থেকে পাওয়া অর্থে মাশরাফির ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে নড়াইলে। মাশরাফি জানিয়েছেন, সহায়তা করা হবে নড়াইলের বাইরেও।