হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা নিয়ে তদন্ত কমিটির দাবি জিএম কাদেরের

30

দেশের হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম খুঁজে বের করতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। সম্প্রতি বিভিন্ন হাসপাতাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ আসার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ দাবি করেন। একইসঙ্গে হাসপাতালগুলোর কী কী প্রয়োজন তা নিয়ে ওই কমিটি করা সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল সোমবার সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি করেন। জিএম কাদের তার বক্তব্যে চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাদ্দের অর্থ পুরোটা খরচ করতে না পারার কঠোর সমালোচনা করেন। এজন্য নতুন অর্থবছরে তাদের বরাদ্দ তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

জিএম কাদের নিজের নির্বাচনী এলাকার লালমনিরহাটের হাসপাতালের চিত্র তুলে ধরে জানান, সেখানে হাসপাতালে ৩৯টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ১১ জন কর্মরত। ৫৪ জন কর্মচারীর মধ্যে কর্মরত ৩৭ জন। ২২ পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মধ্যে ৪টি পদ আছে। ২২ জন ওয়ার্ডবয় ও সমান সংখ্যক আয়ার দরকার হলেও কোনো পদ নেই। নিরাপত্তা প্রহরীর পদও নেই। হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন সময় মন্ত্রণালয়কে এটা জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি। হাসপাতালের যন্ত্রপাতির করুণ চিত্রও তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাজেটে বরাদ্দ হ্রাস করাকে মিতব্যয়িতা বলার চেষ্টা হলেও প্রয়োজনীয় খরচ না করা হলে তা নেতিবাচক। আর এটা হয় সক্ষমতার অভাবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। কর্তব্য পালনে আন্তরিকতার অভাব, দুর্নীতি ও দলাদলিতে ব্যস্ত থাকায় এটা হয়। আর খরচ কম হচ্ছে মানে দুর্নীতির মাধ্যমে অপচয় হচ্ছে না সেটা নয়। খরচ যেটা হচ্ছে তার মধ্যেও অপচয়ের খবর আমরা শুনতে পাই।’

তিনি আরো বলেন, করোনার কারণে সারা বিশ্বে সবার কাছে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশের যে কোনো মানুষকে এখন জিজ্ঞাসা করলে তারা এক কথায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তারা গুরুত্ব দেয়ার কথা বলবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি সম্পূরক বাজেটে কোনো সংশোধনী বাজেট নেই। বাস্তবতা হলো তাদের বাজেট বরাদ্দের চেয়ে খরচ হয়েছে কম। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা তাদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারা খরচ করতে পেয়েছে ২৩ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। দুই হাজার ৪১ কোটি টাকা তাদের খরচ কমানো হয়েছে।

আসন্ন অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ অপ্রতুল দাবি করে তিনি বলেন, ‘মানুষ স্বাভাবিকভাবে ধারণা করেছিল এবার স্বাস্থ্য খাতে বিরাট বাজেট দেয়া হবে। কিন্তু দেখা গেল সেখানে বরাদ্দ হয়েছে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৩ হাজার কোটি টাকার মতো বেশি। আমরা এটা বুঝি যারা বাজেট প্রণয়ন করেছেন তারা দেখেছেন খরচ করতে পারে না তাহলে বাজেট বাড়িয়ে লাভ কী হবে? আমার মনে হয় অর্থমন্ত্রীও এটা মনে করছেন। যার কারণে থোক বরাদ্দ (১০ হাজার কোটি টাকা) দিয়ে এটা রেখে দেয়ার চিন্তা করেছেন।’