স্যানিটেশন মাস এবাং বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা

10

জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অুনষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এসব কর্মসূচির আয়োজন করে।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক র‌্যালির উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.কে.এম তাজকির-উজ-জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রোকনুজ্জামান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখলেশুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. তৌফিকুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীরা।
র‌্যালিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে গ্রিন ভিউ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.কে.এম তাজকির-উজ-জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রোকনুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ জেড এম নূরুল হক বলেন, আমরা প্রতিবছর ১৫ অক্টোবর হাত ধোয়া দিবস পালন করে থাকি এবং অক্টোবর মাস হচ্ছে স্যানিটেশন মাস। গত বছর এ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল, আমার হাত-আমার ভবিষ্যৎ। হাত ঠিকমত পরিষ্কার না রাখি তাহলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- সকলের হাত-পরিচ্ছন্ন থাক। আমাদের হাতে যদি ময়লা, জীবাণু থাকে তাহলে তা খাবারের সময় মুখে যাবে। মুখ থেকে পেটে যাবে। তখন আমরা ডায়রিয়া, কলেরাসহ বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হই। তাই এসব থেকে রক্ষা পেতে আমরা আমাদের হাত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখব। খাবারের আগে ও টয়লেটের পর অবশ্যই হাত ধুতে হবে। এছাড়াও যখনই মনে হবে যে, আমাদের হাত অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন আছে তখনই আমাদের উ”িত হাত ধুয়ে ফেলা। তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডায়রিয়া রোগ ভয়ঙ্কররূপে ছড়িয়ে পড়েছিল। হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি হয়েছিল। সেটার কারণ হিসেবে আমরা খুঁজে পেয়েছি জীবাণুযুক্ত পানি। তখন আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা রোধ করতে পেরেছি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, তোমরা পানি পান করার পূর্বে তা ফুটিয়ে পান করবে। আমাদের এই জেলায় বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। তাই তোমরা তোমাদের পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে পরামর্শ দিবে যেন সকলেই পানি ফুটিয়ে পান করেন। তিনি আরো বলেন, এ জেলার বিশুদ্ধ পানি সংকট নিরসনের জন্য সরকার অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এরই মধ্যে এখানে একটি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। আমাদের আরো ২টি প্ল্যান্ট দরকার। আমরা সোমবার যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নদী থেকে পানি উঠিয়ে প্ল্যান্টে নিয়ে আমরা বিশুদ্ধকরণ করা হবে। এই প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য অনেক খরচ হবে। আশা করছি, সরকার আমাদেরকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবে এবং খুব শিগগিরই বাকি ২টা প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বিশুদ্ধ পানি পান করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, যারা সামনে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থী আছো, তাদের উচিত নিজেদের স্বাস্থ্য ঠিক রেখে ভালোভাবে পড়াশোনা করা।
নাচোল উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ আলীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখলেশুর রহমান, জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুল মালেক।
আলোচনা সভার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক উপায়ে হাত ধোয়ার কৌশল শেখান নাচোল উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ আলী। পরবর্তীতে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী ওই নিয়মে নিজেদের হাত পরিষ্কার করেন।