Last Updated on ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫ by
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত : আসিফ মাহমুদ
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিনা খুব দ্রুতই সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের ষষ্ঠ অধিবেশন শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে কিনা’- এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘এটা (স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনপ্রতিনিধি না থাকা) আমাদের প্রত্যেক দিনের সমস্যা, আমাদের অফিসাররা অধিকাংশই অতিরিক্ত দায়িত্বে বিভিন্ন স্থানীয় সরকারের সংস্থায় কাজ করছেন। তাদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শুনতে হচ্ছে স্যার প্রশাসক দেন, নির্বাচন দেন।’
তিনি বলেন, “আজকে যারা বিভাগীয় কমিশনার এসেছেন, তারা কোনো না কোনো সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। জেলা প্রশাসকদের জেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। একজন অফিসার যখন দুই তিনটি দায়িত্ব পালন করেন, সবগুলো দায়িত্ব একসঙ্গে পালন করা একজন মানুষের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই জায়গা থেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার মাধ্যমে সেখানে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নিয়ে আসা উচিত। সর্বশেষ যে ঐকমত্যের মিটিং ছিল, সেখানেও এই বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।”
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আরো বলেন, “এ বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে হয়নি। তবে খুব দ্রুতই কোনো একটা সিদ্ধান্ত আসবে। হয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচন, অথবা আমরা প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সংস্থাগুলো পরিচালনা করব।”
‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে ভালো হয় কিনা’- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অবশ্যই ভালো হয়। উই হ্যাভ টু রান দি কান্ট্রি। দেখা যায়, একটি ভালো জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত চিন্তা দিয়ে তো সিদ্ধান্ত হবে না? সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে আসবে।”
‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেন আগে প্রয়োজন’- এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, “কমন অভিযোগ আসে একটা ওয়ারিশ সনদ, একটা ডেথ সার্টিফিকেট, জন্মসনদের জন্য গিয়ে ঘুরতে হয়, কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া না যাওয়াটাও স্বাভাবিক, কারণ অফিসারদের তো নিজের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে, অতিরিক্ত হিসেবে সেখানে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। একটা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পর্যন্ত নেই। একজন সরকারি কর্মকর্তা যতই হোক একটা ওয়ার্ডের দায়িত্ব সে ঠিকভাবে পালন করতে পারবে না। এই চ্যালেঞ্জগুলো আছে, জনগণের কথা বিবেচনা করে, জনগণের সেবায় যাতে কোনো বিঘœ না ঘটে, সেজন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের বিষয়টি সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখছি।”
উপদেষ্টা বলেন, জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনাররা মাঠপর্যায়ে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হন সেগুলো আমরা শুনেছি। সেগুলো আমরা অ্যাড্রেস করব।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ বিক্ষিপ্তভাবে অংশগ্রহণ করে তবে সরকারের অবস্থান কি হবে- এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সময়ে বিগত ফ্যাসিবাদের সময় জনগণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে জড়িত ছিল, তাদের অধিকাংশই তো এখন পলাতক অবস্থায় রয়েছে। গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা আছে বিধায় তারা পলাতক অথবা জেলখানায় রয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, যারা আওয়ামী লীগ করেছে কিন্তু কোনো প্রকার অন্যায় অপরাধ কিংবা গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত নয় তারা ক্ষমা চেয়ে আবার মেইনস্ট্রিমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। সেই জায়গা থেকে কেউ যদি নির্বাচন করে তাতে বাধা নেই। তবে কেউ যদি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তাকে কোনোভাবেই নির্বাচনে আসতে দেওয়া হবে না।
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে নাকি আগের মতো প্রতীক ছাড়া হবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, সংস্কার কমিশন এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছে। এ বিষয়ে সংস্কার কমিশনের যে প্রস্তাবগুলো আছে এগুলো নিয়ে ঐক্য কমিশন কনসাল্টেশন করে নীতি নির্ধারণ করবে। সেটা আমাদেরকে দিলে আমরা সেভাবেই প্রসিড করব।