Last Updated on জুন ২৭, ২০২৪ by
সাবেকদের গর্বিত করতে পেরে আনন্দিত মারক্রাম
আফগানিস্তানকে হারিয়ে প্রথমবার কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলটির পূর্ব অধিনায়কদের সর্বোচ্চ সাফল্য বলতে ছিল সেমিফাইনাল! হ্যানসি ক্রনিয়ে, গ্রায়েম স্মিথ বা এবি ডি ভিলিয়ার্সরা কখনও সেমির গ-ি পেরুতে পারেননি! ৭টি ভিন্ন বিশ্বকাপ এবং দীর্ঘ ৩২টি বছর পর প্রোটিয়ারা সেই বাঁধা অতিক্রম করেছে এইডেন মারক্রামের নেতৃত্বে। বৃহস্পতিবার দলকে ফাইনালে তুলে পূর্বসূরীদের কথা স্মরণ করলেন তিনি। খুব কাছে গিয়েও সেমিফাইনাল টপকাতে না পারায় চোকার্স তমকা সেঁটে যায় প্রোটিয়াদের। এবারও যখন দক্ষিণ আফ্রিকা সেমিফাইনালে উঠলো, বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে এই প্রসঙ্গ। এবারও কি নিজেদের চোকার্স হিসেবে প্রমাণ করবেন তারা? সেটি হয়নি। টুর্নামেন্টে দারুণ ক্রিকেট খেলা আফগানিস্তানকে গুড়িয়ে দিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে। আগের প্রজন্মে সেমিফাইনাল থেকে খালি হাতে ফেরাদের একজন ডেল স্টেইন। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার বলে ছক্কা মেরেই ফাইনালে উঠার টিকিট পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। স্টেইনের আগে, পরে সেমিফাইনালে হারের এমন মুহূর্ত আছে একাধিক। ১৯৯৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ সেমিতেও অ্যালান ডোনাল্ড ও ল্যান্স ক্লুজনারের ভুল বোঝাবুঝিতে ফাইনালের টিকিট হারায় তারা। ম্যাচ টাই হওয়ার পর সুপার সিক্সের ফলের ভিত্তিতে প্রোটিয়ারা বাদ পড়ে। শুধু স্টেইন-ডোনাল্ডই নন, সেমিফাইনাল থেকে খালি হাতে ফেরাদের তালিকায় আছেন শন পোলক, গ্রায়েম স্মিথ, এবি ডি ভিলিয়ার্স, জ্যাক ক্যালিস, হ্যানসি ক্রনিয়ের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক কিংবদন্তি। ফাইনালের দেখা পাওয়ার মুহূর্তে ধারাভাষ্য কক্ষে ছিলেন পোলক, তার পাশেই ছিলেন স্টেইন। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক মারক্রাম জানালেন পূর্বসূরীদের গর্বিত করতে পেরে দারুণ খুশি তিনি, ‘দুর্ভাগ্যবশত স্টেইনের সাথে কথা হয়নি। আমি মনে করি, তারা এই খেলাটির কিংবদন্তি, দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের কিংবদন্তি। তাই আমার চোখে, তারা ফাইনাল খেললেন কি খেললেন না, সেটি কোনো বিষয়ই না। কারণ তারা আমাদেরকে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। তাদের কারণেই আমাদের আগে যারা খেলেছে তাদের সবারই প্রতিনিধিত্ব করছি। তাই তাদের গর্বিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। যদিও আমি মনে করি, এখনও একটি ধাপ বাকি আছে। তবে আপাতত ডেল স্টেইনের মতো একজনকে খুশি হতে দেখে আমি খুবই আনন্দিত।’ আফগানিস্তানকে হারানোর পেছনে টস হারকে নিজেদের সৌভাগ্য হিসেবে দেখছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সৌভাগ্যবান যে টসটা হেরেছি, কারণ টস জিতলে আমরাও ব্যাটিং নিতাম। তবে আমাদের বোলাররা ঠিক সময় ঠিক কাজটা করেছে।’ দশ বছর আগের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে মারক্রামের হাত ধরেই শিরোপা জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেবারও কোন ম্যাচ হারেনি তারা। এবারও প্রেক্ষাপট এমনই। বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়ার পর মারক্রাম বললেন, ‘সত্যি বলতে সেটির (২০১৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ) কথা চিন্তা করিনি। অনেক আগের কথা এবং আমার স্মৃতিশক্তি অত ভালো নয়। তবে হ্যাঁ, আপনি যখন জানেন কোনো একপর্যায়ে আগে এটি করেছেন, তখন কিছুটা আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়।’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘আমার মনে হয় না, দুটো পুরোপুরি এক। তবে ফাইনালে উঠলে একই ধরনের চাপ নিতে হয় এবং আমরা ২০১৪ সালে সেই অভিজ্ঞতা পেয়েছি। তাই কিছুটা আত্মবিশ্বাস সেখান থেকে নিতে পারি। যা সম্ভাব্য সেরা উপায়ে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।’ বারবাডোজে আগামী শনিবার হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। প্রথমবার ফাইনালে উঠে ট্রফি জিতে দেশে ফেরার জন্য মুখিয়ে মারক্রাম। প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেছেন, ‘এবারের বিশ্বকাপে কিছুটা ভাগ্য আমাদের সহায় থেকেছে। অনেকগুলো কঠিন ম্যাচও সামান্য ব্যবধানে জিতে গেছি। ফাইনাল খেলার সুযোগ এর আগে কখনও পাইনি, তাই এই সুযোগ কাজে লাগাতে চাই। এই জয় আমাদের কাছে অত্যন্ত স্পেশাল। দলে বহু ভালো মানের ক্রিকেটার রয়েছে, যারা ঠিক সময় জ¦লে উঠেছে বলেই এই পারফরম্যান্স এসেছে।’