Last Updated on জুন ১০, ২০২৪ by
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ৩ লাখ নিবন্ধনের বিপরীতে জমা ৮৭ কোটি টাকা
কার্যক্রম শুরুর ১০ মাসের মাথায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন সংখ্যা নিবন্ধন ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। সাবস্ক্রিপশন বাবত মোট ৮৬ কোটি ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা জমা হয়েছে। এরই মধ্যে নিবন্ধনকারীদের অর্থ হতে সরকারি ট্রেজারি বন্ডে ৬২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগর সিনিয়র সহকারী সচিব (জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষে সংযুক্ত) মো. শরীফ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বয়স্ক জনগোষ্ঠীর একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী সর্বজনীন পেনশন স্কিমের শুভ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর হতেই জনকল্যাণকর এ কর্মসূচিতে মানুষের উল্লেখযোগ্য আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন সংখ্যা ১০ মাসে ৩ লাখের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
বর্তমানে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা নামে চারটি স্কিমে নিবন্ধনের সুবিধা চালু রয়েছে। এ চারটি স্কিমে যথাক্রমে সমতা স্কিমে ২ লাখ ২৪ হাজার ১৬৪, প্রগতি স্কিমে ২১ হাজার ২৯৪, সুরক্ষা স্কিমে ৫৬ হাজার ৯১৯ এবং প্রবাস স্কিমে ৭৯৯ জন নিবন্ধিত হয়ে সর্বমোট ৩ লাখ ৩ হাজার ১৭৬ জন মাসিক সাবস্ক্রিপশন প্রদান করছেন। সাবস্ক্রিপশন বাবত মোট ৮৬ কোটি ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা জমা হয়েছে। এরই মধ্যে নিবন্ধনকারীদের অর্থ হতে সরকারি ট্রেজারি বন্ডে ৬২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমে সক্রিয় সহযোগিতা করতে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রবাস স্কিমে নিবন্ধন প্রত্যাশিত পরিমাণে আনয়নের লক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর কূটনৈতিক শাখা ও শ্রম উইং শাখার সাথে অনলাইনে সভা করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া প্রবাস স্কিমে অংশগ্রহণে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিপুল সংখ্যক তথ্যবহুল ফ্লায়ার বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহে প্রেরণ করা হয়েছে।
বর্তমানে ২টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি ব্যাংক এবং একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধনসহ মাসিক জমা আদায়ে সম্পৃক্ত আছে। এর আওতা আরো বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যার ফলে আরো ৪টি সরকারি ও ৪টি বেসরকারি ব্যাংক ও ১টি মোবাইল ফাইন্যান্সিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান খুব শিগগিরই এ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হবে। এতে করে নিবন্ধন ও মাসিক জমা পরিশোধ সেবা জনগণের জন্য অধিকতর সহজলভ্য হবে। এ প্রক্রিয়ায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জনগণের অংশগ্রহণের হার আরো দ্রুততর হবে, যা প্রধানমন্ত্রীর এ বিশেষ জনকল্যাণকর কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
উল্লেখ্য, এরই মধ্যে ৮৭টি এনজিও প্রগতি স্কিমে নিবন্ধিত হয়ে তাদের কর্মচারীদের অনুকূলে সাবস্ক্রিপশন প্রদান করছে। ৫ম স্কিম হিসেবে ‘প্রত্যয়’ নামে নতুন স্কিম চালু করা হচ্ছে, যা সকল স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা ১ জুলাই ২০২৪ থেকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানে নতুন যোগদান করবেন তাদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে জনগণকে আগ্রহী করতে প্রচার-প্রচারণাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এ লক্ষে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ, বেসরকারি সংস্থা, জনপ্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সুশিল সমাজের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ত করে কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মাঠ প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করার লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে সভাপতি করে জাতীয় পর্যায়ে ‘সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সমন্বয় কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
মাঠপর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমকে মনিটরিং ও সমন্বয়ের লক্ষে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও বাস্তবায়ন ও সমন্বয় কমিটি গঠন করে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের প্রয়োজনীন নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সে অনুযায়ী বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন মেলা ও কর্মশালার আয়োজন করে সকল শ্রেণী-পেশার জনগণকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে গত ১৯ এপ্রিল রাজশাহীতে এবং ৫ মে রংপুর বিভাগে বিভাগীয় পেনশন মেলা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং জেলাপর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।