স্বাধীনতাবিরোধী ও দেশবিরোধী সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বাম দল ও কৃষক শ্রমিকসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের ৭ম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে স্বাধীনতাবিরোধী, ধর্মান্ধ ও দেশের উন্নয়নবিরোধী অপশক্তিরা এখনো খুবই তৎপর ও নানা পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারা দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। তিনি বলেন, দেশকে স্বাধীন করার জন্য ১৪ দল, ওয়ার্কার্স পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক দল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। এখন স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকার জন্যই সারা বিশ্বে দেশটাকে মর্যাদা ও সম্মানে অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশের বাম দল, কৃষক শ্রমিকসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
‘বর্তমান সরকার যে কতটা কৃষিবান্ধব ও পল্লীবান্ধব- তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে শুধু সারে বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া’র কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে ২০০৫-০৬ সালে যেখানে মোট উন্নয়ন বাজেট ছিল মাত্র ২১ হাজার কোটি টাকা, সেখানে চলতি বছর বর্তমান সরকার শুধু সারে ভর্তুকি দিচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। বছরে ভর্তুকি লাগত ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা, দাম চারগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর লাগছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারের দাম এক টাকাও বৃদ্ধি করেননি।
কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণ, জীবিকার জন্য ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন দাবির বিষয়ে মন্ত্রী জানান বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়টি খুবই জটিল। তিনি বলেন, কৃষিকাজ মৌসুমভিত্তিক, সারা বছর সব শ্রমিকের কাজ থাকে না। যখন কাজ থাকে না, তখন মজুরি কীভাবে দেয়া হবে। এছাড়া চাকরি স্থায়ী করলে শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজ করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সারা বছর যে সংখ্যক শ্রমিকের কাজ থাকে, সেসব স্বল্প শ্রমিকের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এছাড়াও তাদের মজুরির পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। বর্তমানে এক কেজি গরুর মাংস কিনতে যেখানে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা লাগে, সেখানে একজন কৃষি ফার্ম শ্রমিক দিনে ৫০০ টাকা মজুরি পান। এটি খুবই কম।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
এসময় সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কৃষি ফার্ম শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।