Last Updated on ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪ by
শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার শাহ নেয়ামতুল্লাহ কলেজ মিলনায়তনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জাতীয় সংসদ এমন এক জায়গা, সেখানে যে আইন দিবেন, সেই আইনই চালু হবে। জাতীয় সংসদ ধর্মনিরপেক্ষতার আইন দিয়ে চলেছে, জাতীয়তাবাদ দিয়ে চলেছে, মানুষের তৈরি মতবাদে চলেছে। এসবের পরও কি দেশের মানুষ শান্তি বা অধিকার পেয়েছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, মানুষের তৈরি আইনে সমাজ বা রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় না এবং হবেও না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহর আইনে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র তথা সংসদ চলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাতে যাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। কাজ সৃষ্টির জন্য শ্রমিক দরকার। শ্রমিক ছাড়া দেশ, রাষ্ট্র, জেলা, উপজেলা সকল কিছুই অচল। ছাত্র আন্দোলনের এই বিপ্লবের পাশাপাশি আমাদের আরেকটি বিপ্লবের জন্য আমাদের লড়তে হবে, সেটা হলো ইসলাম কায়েম করতে হবে। যারা কোরআনের বিধানকে মানতে চায় না তাদেরকে বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন- জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা নূরুল ইসলাম বুলবুল। তিনি অতীতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, কেন রাজনৈতিক স্বার্থে শ্রমিকদের ব্যবহার করা হয়, কেন তাদের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়, কেন তাদের ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা হয়, আর শ্রমিকদের গরিব ও অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলে দেয়? তিনি বলেন, যে সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে সেই সরকার শ্রমিকদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে, শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। তারা ক্ষমতায় আসার পর শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করে তারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য দাবার চাল হিসেবে শ্রমিকদের ব্যবহার করেছে। শুধু তাই নয়, একশ্রেণীর মালিক প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে সুযোগ করে দেয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত গার্মেন্টস খাতে উত্তজনা তৈরি করে গার্মেনন্টসগুলোকে বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে সুযোগ করে দিতে শ্রমিকদের ব্যবহার করেছেন। আমরা শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের জন্য শ্রমিক ইনস্টিটিউট গড়ে তুলব।
বুলবুল বলেন, প্রয়োজন হলে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে বসব। শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, মানুষের তৈরি আইনে শ্রমিক শোষণ মুক্ত হবে না। শ্রমিক শোষণ মুক্তির জন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় শ্রমিক-মালিকের কোনো বৈষম্য থাকবে না। সকলেই রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সমান মর্যাদা ও অধিকার ভোগ করবে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মুনিমুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুজিবুর রহমান ভুঁইয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম, মো. নজরুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগরের প্রধান উপদেষ্টা ড. কেরামত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা আবুজার গিফারী, রাজশাহী অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আব্দুস সবুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, সদর উপজেলা সভাপতি ফরহাদ আহমেদ সায়িম, পৌরসভা সভাপতি মো. এনায়েতুল্লাহসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।