সাম্প্রতিক সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে কুকুরের উপদ্রব। বিশেষ করে কচি-কাঁচা বিদ্যানিকেতন মোড়, স্বর্ণকারপট্টি, মাষ্টারপাড়া, মডেল স্কুল মোড়, থানা মোড়, শিবগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, কিন্ডার গার্টেনের সামনে দিনে-রাতে দল বেঁধে পাগলা কুকুরের বিচরণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। শহরের রাস্তা ও মহসড়কের উপর দল বেধে কুকুরগুলো অবস্থান ও নিজেদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়েছে। এসব পাগলা কুকুরের কামড়ে বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং গরু-ছাগল মারা গেছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সেসাথে স্থানীয় ভাবে ভ্যাকসিন অপ্রতুল হওয়ায় কুকুর নিয়ে আতঙ্কের মাত্রা এলাকাবাসীর মাঝে আরও বাড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত কুকুর নিধন বা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম যথাযথ ভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় এবং কুকুর নিধন না করে এসব পশুর শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষক্রিয়া নষ্টের আইনী বাধ্যবাধকতা থাকায় জনসাধারণকে এখন কুকুরের হামলার শিকার হতে হচ্ছে। স্কুল-কলেজ এর ছাত্র-ছাত্রী তথা অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার এখন শেষ নেই বললেই চলে। পৌর এলাকার মনাকষা মোড় ও কচি-কাঁচা বিদ্যানিকেতনের সামনে কুকুর গুলো বসে থাকায় ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে মুসলি¬দের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। কখনো কখনো তাদের উপর হামলা করে থাকে কুকুরে দল।
একদিকে কুকুরের হামলা আতঙ্ক অন্যদিকে এর প্রতিষেধক ভ্যাকসিন না থাকায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। বাধ্য হয়ে কুকুরের কামড়ে আহতদের চড়া মূল্য দিয়ে দোকান থেকে ভ্যাকসিন ক্রয় করতে হচ্ছে। শিবগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব ইউসুফ আলী জানান, কুকুরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়া এবং তা নিয়ন্ত্রণে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনসাধারণ অসুবিধায় পড়ছে। অবিলম্বে এবিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে কুকুর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তিনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সাথে যারা শখ করে এবং নিরাপত্তার জন্য বাড়িতে কুকুর লালন পালন করে থাকেন তাদের কুকুরের গলায় ডগবেল্ট ব্যবহারের নির্দেশনা জারির জন্য কতৃপর্ক্ষকে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সুরে তুষার আহমেদ নামক পৌরসভার এক ব্যক্তি ক্ষোভের সাথে জানান, তার বাড়ির পালিত ১৫টি মূরগী কুকুরে খেয়ে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. কারীবুল হক রাজিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পৌর এলাকায় কুকুরের উপদ্রব ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কোরবানি ঈদের জন্য ক্রয়কৃত ৮-১০টি ছাগল কুকুরের কামড়ে মারা গেছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে পৌরসভা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত গত বছর কুকুরের উৎপাত বেড়ে গেলে শিবগঞ্জ পৌর কর্তপক্ষ পৌর এলাকায় কুকুর নিধনে নামার একদিনের মাথায় কুকুর নিধনে আইনী বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে তা বন্ধ করে দেয় পৌর প্রশাসন।