Last Updated on জুলাই ২৬, ২০২৪ by
লাইফ সাপোর্টে সংগীতশিল্পী জুয়েল
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা ও সংগীতশিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এ গায়ক। গত বৃহস্পতিবার গায়ক জুয়েলের স্ত্রী সঙ্গীতা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই হাসপাতালে নেয়া হয়। তারপর চিকিৎসকরা আইসিইউতে নেন। এখন ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রয়েছেন জুয়েল। গত ১৩ বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন তিনি। দেশে ও দেশের বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসাসেবাও চলছিল। এখন তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে। জুয়েলের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সংগীতা আহমেদ জানান, অক্টোবর থেকে তাঁকে প্যালিয়েটিভ কেয়ারে রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে সম্প্রতি তাঁকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে গত মঙ্গলবার রাত থেকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। জুয়েলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে তাঁর লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর ফুসফুস এবং হাড়েও ক্যানসার সংক্রমিত হয়। ব্যান্ড সংগীত যখন তুমুল আলোচনায়, ঠিক তখনই ব্যতিক্রমী কণ্ঠ নিয়ে হাজির হন শিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। ব্যাংকার বাবার চাকরির কারণে ছোটবেলায় তাঁকে থাকতে হয়েছিল দেশের বিভিন্ন জায়গায়। মা-বাবার অনুপ্রেরণাতেই গানের জগতে পা রাখেন জুয়েল। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রতিবেশী একজনের কাছে গান শিখেছিলেন আর মঞ্চে প্রথম গান করেছিলেন তখন তিনি পড়েন চতুর্থ শ্রেণিতে। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন জুয়েল। এসেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-কেন্দ্রিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন। তখনই বিভিন্ন মিডিয়ার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঘটতে শুরু করে। জুয়েলের প্রথম অ্যালবাম ‘কুয়াশা প্রহর’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৩ সালে। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় ‘এক বিকেলে (১৯৯৪)’, ‘আমার আছে অন্ধকার’ (১৯৯৫), ‘একটা মানুষ’ (১৯৯৬), ‘দেখা হবে না’ (১৯৯৭), ‘বেশি কিছু নয়’ (১৯৯৮), ‘বেদনা শুধুই বেদনা’ (১৯৯৯), ‘ফিরতি পথে’ (২০০৩), ‘দরজা খোলা বাড়ি’ (২০০৯) এবং ‘এমন কেন হলো’ (২০১৭)। একটি করে গান নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে আরও দুটি অ্যালবাম ‘তাতে কি বা আসে যায়’ (২০১৬) এবং ‘এই সবুজের ধানক্ষেত’ (২০১৬)। ১০টি একক অ্যালবামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘এক বিকেলে’ অ্যালবামটি। এটি প্রকাশের পর তাঁর নাম হয়ে যায় ‘এক বিকেলের জুয়েল’। জুয়েল একই সঙ্গে সংগীতশিল্পী, টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, আর্থিক ও মনের কথা বিবেচনা করে তিনি তাঁর পেশাকে দুটো ভাগে ভাগ করে নিয়েছেন। গান করতেন হৃদয়ের টানে। শিল্পী জুয়েল হিসেবে পরিচিত হতেও পছন্দ করতেন। তাই গান করার সময় যাতে আর্থিক টানাপোড়েনে পড়তে না হয়, সে জন্য আরেকটি পেশা বেছে নিয়েছিলেন।