রোজায় ডায়াবেটিস রোগীরা যা করবেন

41

রমজানে প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানরা রোজা রাখেন। তবে সবার শারীরিক অবস্থা একইরকম থাকে না। অনেকেরই ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস অন্যান্যের তুলনায় আলাদা হয়। কিন্তু রোজায় তারা কী করবেন? খাবার যেহেতু শরীরে সরাসরি প্রভাব রাখে, সেজন্য দীর্ঘ সময় না খাওয়ার কারণে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা একদিকে যেমন কমতে পারে, অন্যদিকে হাইপোগ্লুকোমির্য়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়:
* নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা চেক করুন।
* যদি আপনি বিচলিত বা অসুস্থ বোধ করেন তাহলে দ্রুত রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করে দেখুন। এই লক্ষণগুলো হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণে হতে পারে।
* রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ৩০০ সম/ফখ হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
* চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টি-ডায়াবেটিক ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করুন। রোজার সময়ের জন্য চিকিৎসক ওষুধ গ্রহণের সময় পরিবর্তন করে দেবেন।
ডায়াবেটিস রোগীরা ইফতারে যেমন খাবার খাবেন:
* সবার জন্যই সঠিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করা জরুরি। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বিকল্প বেছে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভুল এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। তাই খাবার নির্বাচনে সতর্ক হোন।
* ইফতারের সময় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন, অল্প করে গ্রহণ করুন।
* ইফতারে শরবত দেখে যতই তেষ্টা লাগুক না কেন, একদমই ছোঁবেন না যেন@ চিনি সমৃদ্ধ ও ডিপ ফ্রাই করা খাবার গ্রহণ করবেন না।
* অনেক বেশি ও ভারী খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এগুলো পেটফাঁপা ও এসিডিটির সমস্যা তৈরি করতে পারে। হালকা খাবার অল্প করে খান।
* রোজা ভাঙার পর স্বাস্থ্যকর তরল গ্রহণ করুন। পানি সবচেয়ে ভালো পানীয়। এছাড়াও লেবু পানি, ঘোল, মিষ্টি ছাড়া লাচ্ছি পান করতে পারেন। শরবত, ফলের জুস, প্যাকেটজাত মিষ্টি পানীয় গ্রহণ এড়িয়ে চলুন। সুস্থ থাকবেন।
* ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় যেমন-কফি, সোডা বা ফ্রিজি ড্রিংক পান করবেন না। কারণ, এই পানীয়গুলো ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা সেহরিতে যেমন খাবার খাবেন:
* সেহরিতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
* কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের এবং উচ্চমাত্রার ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। এধরনের খাবার দীর্ঘক্ষণ পাকস্থলীতে থাকে এবং ক্ষুধা কম লাগে। কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবারগুলো হচ্ছে – বাদামী চাল, গম, ওটস বা বার্লি।
* লিগিউম জাতীয় খাবার যেমন মটরশুঁটি খেতে পারেন, লো ফ্যাটের দুধ ও পনির খেতে পারেন। এ ছাড়া একটি আস্ত ফল খান। আপনার ডায়েটে ডাল ও সবজি যোগ করুন।
যা খেতে পারেন:
সেহরি- ২ টুকরো মাঝারি আকারের গ্রিল/ বেকড/ ষ্টীম চিকেন ও ১ টি রুটি অথবা ১টি আস্ত গমের চিকেন রোল।
ইফতার- ২ টি ডিমের সাদা অংশ ও আস্ত গমের ১ টি রুটি,অথবা ২ টি ওটমিলের প্যানকেক ও ১ গ্লাস দুধ।
রাতের খাবার- ১ বাটি সালাদ, ২ টি মাছ ও ১টি রুটি অথবা ১ বাটি মোরগ-পোলাও ও ১ বাটি সবজি।