রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ : প্রধানমন্ত্রী

7

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরএনপিপি) স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই পরামাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ‘আরএনপিপি’র জন্য পরমাণু জ্বালানি গ্রহণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মস্কোর ক্রেমলিন থেকে রুশ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন যুক্ত হন।
ভিয়েনা থেকে ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা-আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসিও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই পরামাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘কাজেই, আমরা এটাই মনে করি, আজকের বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করেছি।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুপ্রতীম দেশ রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দেশসহ সকলকে সম্মানিত করায় তিনি রাশিয়ার ফেডারেশন এবং এর প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে তার সরকার, দেশবাসী ও তার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশ-রাশিয়া বন্ধুত্ব অটুট থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রেসিডেন্ট পুতিনের বক্তৃতার উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এইমাত্র আমরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছ থেকে শুনেছি ২০২৬ সালে আমাদের দ্বিতীয় ইউনিট এবং ২০২৪ সালে প্রথম ইউনিট চালু হবে। আমরা সেই লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছি। অচিরেই প্রথম ইউনিট থেকে ১২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আর এই বিদ্যুৎ হবে অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব।”
এর আগে তার সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম ইউনিট থেকে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল বলেও জানান তিনি। “অচিরেই প্রথম ইউনিট থেকে ১২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে,” যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য আমরা পৃথক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছি। যে কোনো ধরনের দুর্যোগে আমাদের এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকটা খেয়াল রেখে এই প্ল্যান্টের ডিজাইন প্রণয়ন এবং নির্মাণ কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তাছাড়া, ব্যবহৃত জ্বালানি (স্পেন্ট ফুয়েল) ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি। রাশিয়ান ফেডারেশন এসব স্পেন্ট ফুয়েল তাদের দেশে ফেরত নিয়ে যাবে বলে আমাদের কথা দিয়েছে।
রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
শুরুতে, আরএনপিপি’র প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি তৈরি ও বিতরণের ওপর একটি অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়, যেখানে আরএনপিপি প্রকল্প পরিচালক এবং এনপিসিবিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শওকত আকবর আরএনপিপি-র পরিচিতি তুলে ধরেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. আলী হোসেন।
পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তরের জন্য জ্বালানি সরবরাহের সনদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের হাতে জ্বালানি সরবরাহের একটি মডেল তুলে দেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু, জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং দলের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক গণভবন প্রান্তের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।