রাজধানীতে যানজট সংকট নিরসনে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ এর পর সরকার আরো দুটি মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছে। মেট্রোরেল লাইন-১ এবং মেট্রোরেল লাইন ৫ শিরোনামে এ দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
পরিকল্পানা কমিশনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ প্রকল্প দুটি অনুমোদন দেয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কমিশনের কর্মকর্তা জানান, শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে একনেক চেয়ারপারসন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন। প্রকল্প দুটির মোট বরাদ্দের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে পাওয়া যাবে ২৫ হাজার ২৩২.৬০ কোটি টাকা এবং বাকি ৬৮ হাজার ৫৬৭.৩২ কোটি টাকা পাওয়া যাবে জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার (জাইকা) কাছ থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড দুটি প্রকল্পই বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনা কমিশনের মুখপাত্র জানান, বিশ্বে সর্বাধিক জনবহুল নগরীগুলোর মধ্যে ঢাকা একটি। ২০০১ সালে এই নগরীতে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৬০০, ২০১৩ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫ হাজার ৪০০। তিনি বলেন, রাজধানীতে ক্রমবর্ধমান ট্রাফিক সমস্যা নিরসন চেষ্টায় সরকার ২০১৬ সালে ৬ বছর মেয়াদি রিভাইজড স্ট্রাটিক ট্রান্সপোর্ট প্লান অনুমোদন করে। পরিকল্পনায় রাজধানীতে ট্রাফিক সমস্যা নিরসনে গণপরিবহন নেটওয়ার্কে পাঁচটি এমআরটি লাইন স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। এমআরটি লাইন-৬ এর কাজ চলমান রয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অপর এক কর্মকর্তা জানান, এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১.৪৩ কোটি টাকা। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে পাওয়া যাবে ১৩ হাজার ১১১.১১ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা পাওয়া যাবে জাইকার কাছ থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে। ৩১.২৪ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-১ এর মধ্যে ১৬.২১ কিলোমিটার হবে আন্ডারগ্রাউন্ড হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত। কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত ১১.৩৬ কিলোমিটার এলিভেটেড সড়ক হবে। পাশাপাশি নতুন বাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত ৩.৬৫ আন্ডারগ্রাউন্ড লাইন করা হবে। অপর দিকে এমআরটি লাইন-৫ নগরীকে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চল দুটি রুটে বিভক্ত করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪১ হাজার ২৩৮.৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ১২১.৪৯ কোটি টাকা পাওয়া যাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এবং বাকি টাকা পাওয়া যাবে জাইকার কাছ থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে। এমআরটি লাইন-৫ হেমায়েতপুর থেকে শুরু হবে এবং আমিনবাজার, গাবতলী, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-১ হয়ে ভাটারা এসে শেষ হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের কর্মকর্তা জানান, এমআরটি-১ এবং এমআরটি-৫ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রাজধানীর যান চলাচল স্বাভাবিক হবে। খবর বাসস।