যুবলীগের সভাপতি সম্রাট ও সহ-সভাপতি আরমান গ্রেপ্তার

41

কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আটক হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটকে নিয়ে তার কাকরাইলের কার্যালয় ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশী মদ, ইয়াবা, বিদেশী পিস্তল, গুলি ও ক্যাঙারুর চামড়া উদ্ধার করে র‌্যাব। দুপুর সোয়া ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‌্যাব। একই সময় স¤্রাটের ভাইয়ের শান্তিনগরের বাসা ও সম্রাটের মহাখালীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। তবে সেখান কী পাওয়া গেছে তা জানায়নি র‌্যাব।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এই ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অবস্থান করেছিলেন সম্রাট। পরে তিনি অন্য জায়গায় চলে যান। র‌্যাবের ডিজি বেনজীব আহমেদ বলেছেন, অভিযান শুরুর ২ দিনের মাথায় সম্রাট ঢাকা ত্যাগ করেন।
রবিবার কুমিল্লা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব জানিয়েছে, স¤্রাটের কার্যালয় থেকে ১ হাজার ১৬০টি ইয়াবা, বিপুল পরিমাণ বিদেশী মদ, একটি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড গুলি ও দুটি ক্যাঙারুর চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে।
ক্যাঙারুর চামড়া পাওয়ায় বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর কুমিল্লায় গ্রেপ্তারের সময় আরমান ‘মদ্যপ’ থাকায় তাকে সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে র‌্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম জানিয়েছেন।
গতকাল ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও যুবলীগের আরেক নেতা এনামুল হক আরমানকে আটক করে র‌্যাব। সেখান থেকে তাদের দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব সদর দপ্তরে নেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের নিয়ে অভিযানে বের হয় র‌্যাব। বেলা সোয়া ১টার দিকে সম্রাটকে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে নেয়া হয়।
গত মাসের মাঝামাঝি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম আলোচনায় আসে। অভিযানে যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা র‌্যাব-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র‌্যাব। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতারাই মূলত এই ক্যাসিনো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রথম দিন ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব। এরপরই গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্লাবটির সভাপতি খালেদ হোসেন ভূঁইয়াকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরা মনে করেন, ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক স¤্রাট।

যুবলীগ থেকে সম্রাট ও সহযোগী আরমানও বহিষ্কার
যুবলীগ থেকে বহিষ্কার হয়েছেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি সম্রাট রবিবার ভোরে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সংগঠন থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। কেন্দ্রীয় যুবলীগের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজুবিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকা ও দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে সম্রাটকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
সম্রাটের পাশাপাশি তার সহযোগী ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানকেও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মিজু নিশ্চিত করেছেন।