যথাযোগ্য মর্যাদায় জেলায় গণহত্যা দিবস পালিত

32

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় শুক্রবার যথাযোগ্য মর্যাদায় গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। আলোচনা সভা থেকে বক্তারা দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেছেন। এ উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে।
রাত ৯টা থেকে সারাদেশের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জেও এক মিনিট প্রতীকী ব্ল্যাক আউট থাকে। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিলÑ ২৫ মার্চের স্মৃতিচারণ, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলা, মোমবাতি প্রজ্বলন, আলোচনা সভা ইত্যাদি। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ :
নিজস্ব প্রতিবেদক : দিবসটি উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি আলোচনা সভা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ রুহুল আমিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মনোয়ারা খাতুন। সূচনা বক্তব্য দেনÑ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহান। সভা সঞ্চালন করেন নামোশংকরবাটী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক গোলাম ফারুক মিথুন।
এদিকে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মোস্তফা মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. মো. দেলোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তসলিম উদ্দিন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেনÑ কৃষি অনুষদের প্রধান ড. আশরাফুল আরিফ ও কৃষি অনুষদের প্রভাষক মুজিবুর রহমান খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের ভয়াবহ চিত্র সবার সামনে তুলে ধরে বলেন, এই কালরাতে আমরা অনেক বুদ্ধিজীবীকে হারিয়েছি। তিনি সকলকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেনÑ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের আহ্বান না করলে আমরা আজ এই সোনার বাংলাদেশ পেতাম না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তসলিম উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেনÑ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে তিনিসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের মুক্তিকামী অন্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করার জন্য অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন ও সম্মানিত করার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পড়া এবং জানার জন্য উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ জানান।
শিবগঞ্জ : শুক্রবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব-আল-রাব্বির সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেনÑ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বজলার রশিদ সনু, শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জোবায়ের আহম্মেদসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
পরে জেলার প্রধান গণকবর সোনামসজিদ বালিয়াদীঘি গণকবরে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন ও মোমবাতি প্রজ্বলনসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হয়।
নাচোল : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাচোল উপজেলা পরিষদ মিনি কনফারেন্স রুমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদের সভাপতিত্বে উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য দেন নাচোল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বাবু, নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ মিন্টু রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান ও মোশারফ হোসেন, নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাইরুল ইসলাম।
গোমস্তাপুর : যথাযোগ্য মর্যাদায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় রহনপুর বিজিবি ক্যাম্পের সামনে বধ্যভূমিতে মাল্যদান, মোমবাতি ও প্রদীপ প্রজ্বলন এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গোমস্তাপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমা খাতুন। এতে বক্তব্য দেনÑ সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তাফা বিশ্বাস, রহনপুর পৌর মেয়র মতিউর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল।
পরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।