মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা কমাতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের সব মুসলিম দেশ একসঙ্গে কাজ করলে, ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবসহ মুসলিমদের জন্য আরো ভালো অবস্থানে পৌঁছানো সহজ হতো। তিনি বলেন, “আজকে যদি আমাদের সকল মুসলিম দেশগুলো এক হয়ে একযোগে কাজ করতে পারত, তাহলে আমরা এ বিষয়ে আরো অগ্রগামী হতে পারতাম।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজক্যাম্পে ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘হজ কার্যক্রম ২০২৪’-এর উদ্বোধনকালে দেওয়া প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে তিনি নিজেকে একমাত্র বোন (সরকারপ্রধান) হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “আমার এখানে একটাই কথাÑ সকলে এক হন এবং এ ধরনের অন্যায় অবিচার যেন আমাদের ওপর না হয়, সেজন্য সকলেই লক্ষ্য রাখবেন।”
আন্তর্জাতিক যে ফোরামে কথা বলেছেন, সেখানেই ফিলিস্তিনিদের জন্য তার কণ্ঠ ‘সোচ্চার ছিল’- উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি প্রতিটি জায়গায় এর প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। কারণ ফিলিস্তিনিরা আরব ভূখ-ে তাদের জায়গা তারা পাবে, এটা তাদের অধিকার। এই অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। কাজেই সেই অধিকার তাদের দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আপনারা দেখছেন ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। সেখানে নারী ও ছোট ছোট শিশুদেরকেও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। কাজেই তাদের জন্য, বাংলাদেশের জন্য ও সারা বিশে^র মুসলিম উম্মাহর জন্য আপনারা (হজযাত্রী) দোয়া করবেন।
তিনি হজযাত্রীদের কাছে দেশ ও জাতির জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, তার সরকার হাজিদের জন্য যে সুযোগ-সুবিধা সংবলিত হজ ব্যবস্থাপনা করতে পেরেছে, সেটা ধরে রেখে যেন এটাকে আরো উন্নত করতে পারেÑ সে দোয়াটা আপনারা করবেন আর দেশের মানুষের জন্য দোয়া করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন আমাদের মানুষের জন্য গোলাভরা ধান দেন, পুকুরভরা মাছ দেন, সুন্দর-উন্নত জীবন দেন, সেই দোয়া করবেন।” এ সময় তার সরকার হজ ব্যবস্থাপনাকে আরো উন্নত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটুকু বলব যে, আজকে আমরা হজ ব্যবস্থপনাকে উন্নত করেছি, প্রতিবারই যারা যাচ্ছেন যে কোনো সমস্যা হচ্ছে সেটাকে আরো উন্নত করার পদক্ষেপ নিচ্ছি। আর এক্ষেত্রে সৌদি সরকার সবসময় আমাদেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তিনি সৌদি বাদশাহ এবং ক্রাউন প্রিন্সকে এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো আতিকুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান বক্তৃতা করেন।
হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ হামিদ জমাদ্দারও বক্তৃতা করেন। দুজন হজযাত্রী অনুষ্ঠানে নিজস্ব অভিব্যক্তিও ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০২৪ সালের হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা প্রদর্শিত হয় এবং শেষে দেশ-জাতি ও হজযাত্রীদের সার্বিক মঙ্গল কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ বছর মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ বাংলাদেশী হজ পালন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৫৬২ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮০ হাজার ৬৯৫ জন ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।
এ বছর আজ বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশী হজযাত্রীদের নিয়ে হজ ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-৩৩০১ বিমানটি ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।