Last Updated on ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪ by
মুমিনের সৌন্দর্যবোধ পোশাক-পরিচ্ছদে
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক অতিশয় সুন্দর ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, সৌন্দর্য আমার অতি প্রিয়, আর আমাকে সৌন্দর্য দান করা হয়েছে যা আপনি দেখছেন। এমনকি আমি এতটুকুও পছন্দ করি না যে জুতার ফিতা বা তার লাল অগ্রভাগের সৌন্দর্যের দিক দিয়েও কেউ আমাকে অতিক্রম করে যাক। এটা কি অহংকার? নবী (সা.) বলেন, না; বরং অহংকার হলো সত্য থেকে বিমুখ হওয়া এবং মানুষকে হেয়প্রতিপন্ন করা। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪০৯২)
মুহাদ্দিসরা বলেন, উল্লিখিত হাদিসে উত্তম পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়তের একটি মূলনীতির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
তা হলো, উত্তম ও সুন্দর পোশাক পরিধানের সাধারণ আকাক্সক্ষাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই পোশাক যদি আত্মগরিমা ও অহংকারের কারণ হয়, তবে তা নিষিদ্ধ। বিশেষত যখন তা অন্যকে হেয়প্রতিপন্ন করার উপলক্ষ হয়।
সুন্দর পোশাক পরিধানে উৎসাহ : ইসলাম মুমিনদের উত্তম পোশাক পরিধান করতে উৎসাহিত করেছে। যেমন-
১. পোশাক সুন্দর হওয়াই কাম্য : পবিত্র কোরআনে পোশাককে সৌন্দর্যের উপকরণ বলেছেন। যা থেকে বোঝা যায় পোশাক সুন্দর হওয়াই কাম্য। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানবজাতি, আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দোষণীয় তা ঢাকার জন্য এবং তা সৌন্দর্যেরও উপকরণ। বস্তুত তাকওয়ার যে পোশাক সেটাই সর্বোত্তম। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৬)
২. আল্লাহ নিয়ামতের বহিঃপ্রকাশ দেখতে চান : আল্লাহ মানুষকে যে সম্পদ ও সামর্থ্য দান করেছেন ব্যক্তির জীবনাচারে তার বহিঃপ্রকাশ দেখতে চান। এজন্য সাহাবি মালিক বিন আউফ (রা.)-এর শরীরে মলিন পোশাক দেখে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, ‘যখন আল্লাহ তাআলা তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন তখন তোমার ওপর তাঁর নিয়ামতের ছাপ থাকা চাই। ’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৫২৯৪)
৩. শালীনতা সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য : ইসলামের দৃষ্টিতে শালীনতাই সৌন্দর্যের প্রধান দিক। সুতরাং পোশাক শালীন না হলে তা সুন্দর বলার অবকাশ নেই। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান, আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৬)
নবীজি (সা.)-এর হুঁশিয়ারি : রাসুলুল্লাহ (সা.) সুন্দর পোশাক পরিধান করতে বলেছেন। তবে অহংকারের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহংকারবশত মাটিতে কাপড় টেনে টেনে চলে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৭৯১)
আল্লাহ সবার জীবনকে সুন্দর করুন। আমিন