মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১ জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on আগস্ট ২০, ২০২৪ by

মাঙ্কিপক্সে কঙ্গোতে মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৭০

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (ডি আর) কঙ্গোতে ভাইরাসজনিত রোগ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৫৭০ জন ছাড়িয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্যামুয়েল রজার কাম্বা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সময় গত সোমবার রাজধানী কিনশাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৭০০ জন এবং এ রোগে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫৭০ জন ছাড়িয়েছে। এই রোগের বিস্তার ঠেকাতে পুরো আফ্রিকা মহাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা প্রয়োজন। অন্যান্য দেশের সরকারের সঙ্গে এ ইস্যুতে আমাদের আলোচনা চলছে।” রোগটির সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। ইতোমধ্যে ডি আর কঙ্গোর প্রতিবেশী দেশ বুরুন্ডি, কেনিয়া, রুয়ান্ডা এবং উগান্ডাতেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়া ইউরোপের সুইডেনেও এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এশিয়ায় পাকিস্তান ও ফিলিপাইনে এমপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদিকে ফিলিপাইনে এক ব্যক্তির শরীরে এমপক্স ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ৩৩ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি কখনো বিদেশ ভ্রমণ করেননি। গত রোববার তাঁকে একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত সোমবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে। তবে এই ভাইরাসের কোন ধরনটি ফিলিপাইনে এখন শনাক্ত হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী টেওডোরো হারবোসা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে।

এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।’ এমপক্স আতঙ্কে ভারতের সকল বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সাথে ভারতের স্থল সীমান্তেও জারি করা হয়েছে সতর্কতা। বাংলাদেশেও প্রধান বিমানবন্দর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই রোগে আক্রান্তদের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ¦র, মাথাব্যথা, ফোলা, পিঠে এবং পেশিতে ব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির একবার জ¦র উঠলে গায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। সাধারণত মুখ থেকে শুরু হয়ে পরে হাতের তালু এবং পায়ের তলদেশসহ শরীরের অন্যান্য অংশে তা ছড়িয়ে পড়ে। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ বিষয়ে চিকিৎসকেরা বলছেন, কাঁপুনি দিয়ে জ¦র, মাথা ও পেশিতে ব্যথা, শরীরে হাত পায়ে ব্যথা ইত্যাদি মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক কিছু উপসর্গ। এ ছাড়া মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলে শরীরের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। শরীরে ছোট ছোট অসংখ্যা ক্ষতচিহ্নের দেখা মেলে। ধীরে ধীরে সেই ক্ষত আরও গভীর হয়ে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

মাঙ্কিপক্স ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে। মাঙ্কিপক্স সংক্রমিত ব্যক্তিকে র্স্পশ করা, চুমু দেওয়া, যৌন সম্পর্ক থেকে এটি ছড়াতে পারে। সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের খুব কাছাকাছি থাকলে সংক্রমণ ঝুঁকি থাকে। মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত প্রাণীর কাছাকাছি গেলেও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিসপত্র থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। সংক্রমণের ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে এটি নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যেতে পারে। মাঙ্কিপক্স একটি বিরল ও স্বল্প পরিচিত রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার উষ্ণ ও আর্দ্র বনাঞ্চলের বানররা ছিল এ রোগের প্রথম শিকার।তার পর একসময় মানবদেহেও সংক্রমিত হওয়া শুরু করে রোগটি। স্মলপক্স ভাইরাস শ্রেণীর একটি ভাইরাস এ রোগের জন্য দায়ী। ভাইরাসটির দুইটি রূপান্তরিত ধরন রয়েছে, ক্ল্যাড – ১ (মধ্য আফ্রিকান) এবং ক্ল্যাড- ২ (পশ্চিম আফ্রিকান)। এই রোগে প্রতি ১০০ আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয় ৪ জনের।
সূত্র : এনডিটিভি

About The Author

শেয়ার করুন