ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী ২৬ জুনের মধ্যে অনুসন্ধান করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এ নির্দেশ দেন। পাশাপাশি রুলও জারি করেছেন আদালত।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক ও মো. তামজীদ হাসান।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওবায়েদ আহমেদ এ রিট করেন।
ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরার আজমপুর অংশের মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখেই ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘটনা তদন্ত চেয়ে রবিবার হাইকোর্টে রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওবায়েদ আহমেদ এ রিট দায়ের করেন।
বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘মহাসড়ক বন্ধক দেখিয়ে লুটপাট ১৫ কোটি টাকা’ শীর্ষক শিরোনামের প্রতিবেদনটি রিটে যুক্ত করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখেই একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন মো. গোলাম ফারুক নামের এক ভয়ঙ্কর প্রতারক। ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই তিনি বাগিয়ে নেন মোটা অঙ্কের এ ঋণ। তবে সেটি ধরা পড়ার পর আবার সংশোধন করেন দলিল। এবার আগের বন্ধককৃত জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে ব্যাংকে জমা দেন। সংশোধিত দলিলের জমিতে বন্ধকী সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্থাপনের চেষ্টা করলে ব্যাংক জানতে পারে সেটিও ভুয়া। সংশোধিত দলিলের জমির আসল মালিক জামির আলী।
২৭ শতাংশ ওই জমি দখলে নিতে একাধিকবার তার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা চলে। অবশেষে গত ১৪ এপ্রিল রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে ফারুকসহ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফিরোজ আল মামুন ওরফে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
১৫ এপ্রিল দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
রিটের পক্ষে আইনজীবী বলেন, গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সম্প্রতি গোলাম ফারুক একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু মহাসড়কের জমি বন্ধকের ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ওই ঘটনার তদন্ত চেয়ে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়।