চাঁপাইনবাবগঞ্জে মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থার হাজার হাজার গ্রাহক তাদের জমা রাখা কোটি কোটি টাকা ফেরৎ ও মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অনড় রয়েছে। গত ১ এপ্রিলের সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ‘ভুক্তভোগী গ্রাহক ফোরাম ও কর্মচারীবৃন্দ’র ব্যানারে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে শত শত নারী-পুরুষ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
অবস্থানকালে গ্রাহকরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মধুমতি’র সকল মালিককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং মালিকদের সম্পত্তি বিক্রি করে ৩৫ হাজার গ্রাহকদের ১০৫ কোটি টাকা মূলধন লাভসহ ১১৩ কোটি টাকা ফেরত প্রদানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান চলার একপর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব তার অফিস কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি মধুমতি-সংক্রান্ত মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন।
পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অবস্থান নেন। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা রমেশ চন্দ্র, শিক্ষক দেলছাদ আলী, জনি হোসেন, মমতাজ বেগম, রেজাউল আলী, কর্মচারী ইসলাম উদ্দীন প্রতারিত গ্রাহকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন।
এসময় গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন- স্থানীয় সরকার চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক সরকারের উপসচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম। তারা বলেন, ভুক্তভোগীদের কথা জেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। আপনারা আপনাদের কথার সারসংক্ষেপ লিখিত আকারে দিবেন, জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।
এর আগে গত ১ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী গ্রহকরা অভিযোগ করেছিলেন, মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা জেলার ৪৬টি শাখার মাধ্যমে ৩৫ হাজার গ্রাহকের ১০৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছিল, স্থানীয় সমাজসেবা ও সমবায় অফিসের নিবন্ধন নিয়ে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন কৌশলে ৩৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে মোট ১০৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ রানা।
উল্লেখ্য, মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ রানা গত বছরের ১৭ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ব্রিজের টোলঘরের সামনের রাস্তা থেকে অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। তিনি জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।