জার্মানির রাজধানী বার্লিনে বিশেস অলিম্পিকে সাঁতারে স্বর্ণ জয় করা ওয়াকিয়া নিজ বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার বীরেশ্বরপুরে ফিরেছেন। বাড়ি ফিরেই ভাসছেন সংবর্ধনায়। গত শুক্রবার ও শনিবার পৃথক আয়োজনে দুটি সংগঠন তাকে এ সংবর্ধনা দেয়।
গত শনিবার রাতে স্বর্ণপদক জয়ী ওয়াকিয়াকে ভোলাহাট স্পর্স-ঢাকা সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা হিসেবে তার হাতে একটি সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ দশ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়।
ওয়াকিয়ার বাবা মো. আজাদ আলী বলেন, আমার দুটি সন্তান। বড়টি ছেলে, ছোটটি মেয়ে। আমার দুই সন্তানই বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি। তিনি বলেন, আমি খেটে খাওয়া মানুষ। আমার মেয়ে উপজেলার প্রতিবন্ধী স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। আমার মেয়ের এই সাফল্যে আমি গর্বিত। বিশ্বজুড়ে আমার ওয়াকিয়ার নাম হয়েছে। আমার মেয়ে বাংলাদেশের সুনাম অর্জন করেছে। তিনি বলেন, আমার মেয়ে প্রথমে উপজেলায় খেলায় প্রথম হয়েছে। পরে জেলা, বিভাগ ও ঢাকাতে প্রথম হয়ে জার্মানির বার্লিনে অলিম্পিক গেমসে স্বর্ণপদক জয় করেছে। আমার বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে ভাঙা ঘরে আলো জ্বালিয়েছে, আমি খুবই আনন্দিত।
ওয়াকিয়ার কাছে স্বর্ণপদক জয়ের অনুভূতি জানতে চাইলে হাসি হাসি মুখে হাত-পা নেড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি। তার ইশারা সম্পর্কে মা বলেন, সে স্বর্ণপদক জয় করায় খুব খুশি হয়েছে। বিভিন্ন মানুষ তাকে দেখতে ভিড় করছেন।
ওয়াকিয়ার মা আরো বলেন, আমার মেয়ে কথা বলতে না পারলেও তার সব কথা আমরা বুঝতে পারি। বাড়িতে আমার মেয়ে সবসময় খুব হাসিখুশি থাকে। তিনি বলেন, ভালো প্রতিবন্ধী স্কুলে পড়ালেখা করার খুব ইচ্ছে আমার মেয়ের। কেউ তার পড়ালেখার দায়িত্ব নিলে খুব ভালো হতো বলে জানান তিনি।
বাবা আজাদ আলীর বাড়িতে স্বর্ণপদক জয়ী ওয়াকিয়াকে দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে যাচ্ছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। ওয়াকিয়া এখন ভোলাহাট উপজেলার গর্বিত স্বর্ণকন্যা। তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন ভোলাহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের যুগ্ম পরিচালক ও মানবিক ফাউন্ডেশন-ভোলাহাটের চেয়ারম্যান মো. রশীদুল আলম জেম।
এদিকে গত শুক্রবার বীরেশ^রপুর গ্রামের একটি মাদ্রাসায় ওয়াকিয়াকে মানবিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত বিশেষ অলিম্পিক-২০২৩ এ টিম সাঁতার ও ২০০ মিটার দৌড়ে বাংলাদেশের হয়ে স্বর্ণপদক জয় করেন ওয়াকিয়া।