ভোলাহাটে শ্রমিক সংকটে ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা

23

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক কৃষকই ধান কাটতে পারছেন না। অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও ধান কাটা ও মাড়াইয়ের শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
এদিকে ঈদের আগে ও পরে ভোলাহাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে মাঠের পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর ৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ৬৩২ মেট্রিক টন। ধান কাটা শুরু হয়েছে এক সপ্তাহ ধরেই। তবে কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, এবার ধানের ফলন ভালো হলেও শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিকরা নিজ উপজেলা বাদ দিয়ে বেশি আয়ের আশায় অন্যত্র চলে যাওয়ায় তারা বেকায়দায় পড়েছেন।
বিলভাতিয়ায় শ্রমিক না পেয়ে নিজ জমিতে ধান কাটছেন ইলেকট্রিসিয়ান শহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, এবার নিজের ১২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। কিন্তু শ্রমিক না পাওয়ায় ইলেকট্রিসিয়ানের কাজ বাদ দিয়ে আত্মীয়স্বজন, ভাইকে নিয়ে নিজেরাই ধান কাটতে শুরু করেছেন। ধান মাড়াইয়ের কাজটিও তাদের করতে হবে বলে জানান।
শহিদুল আরো জানান, এবার ধানের ফলন ভালো; তবে কিছু জমির ধান পোকার আক্রমণে ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা বেশি আয়ের আশায় বরেন্দ্র অঞ্চলে ধান কাটতে চলে গেছেন। তিনি বলেন, আগে ছয়-সাতজন শ্রমিক এক বিঘা ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করে দিলে প্রায় আড়াই মণ ধান দিতে হতো। এবার শ্রমিকরা সাড়ে চার মণ চাচ্ছেন। তাও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ধানের বদলে টাকা দিলে একজন শ্রমিককে এখন এক বেলার জন্যই দিতে হচ্ছে ৭০০ টাকা। গতবছর শ্রমিকের পারিশ্রমিক কম ছিল।
শ্রমিক না পেয়ে একই এলাকায় নিজের জমিতে একাই ধান কাটছিলেন আরেক কৃষক ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, শ্রমিকরা বেশি পারিশ্রমিকের আশায় উপজেলার বাইরে কাজে চলে যাওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে শ্রমিক না পেয়ে নিজেকেই ধান কাটতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আলী এবার ভোলাহাটে শ্রমিক সংকটের কারণ হিসেবে বলেন, ধান কাটা হচ্ছে কঠিন কাজ। ফলে শ্রমিকরা সহজ কাজে ঝুঁকে পড়ছেন। তিনি জানান, ধান কাটা মাড়াইয়ের জন্য সরকার ভর্তুকি দিয়ে আধুনিক যন্ত্র দিচ্ছেন তা ব্যবহার করলে শ্রমিক সংকট দূর হবে।