Last Updated on জানুয়ারি ২০, ২০২৫ by
ভোলাহাটে মিষ্টি কুমড়া চাষ : আগের বছরগুলোতে লাভ করলেও কৃষক এবার লোকসানের মুখে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষকরা। ফলন ভালো হলেও কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন বিক্রি নিয়ে। তাদের উৎপাদিত কুমড়া কিনতে পাইকাররা না আসায় লোকসানের মুখে রয়েছেন তারা।
তবে এবার লোকসানের মুখে পড়লেও কয়েক বছরে মিষ্টি কুমড়া চাষে লাভবান হয়েছিলেন উপজেলার কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬৩৯ হেক্টর জমিতে। গতবছর কৃষকরা মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে লাভবান হওয়ায় এবার ৭৩৯ হেক্টর জমি বেশি চাষাবাদ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তালপল্লী থেকে ফলিমারি রাস্তার দুই পাশে মিষ্টি কুমড়ার স্তূপ করে রেখেছেন কৃষকরা। এর আগে জমি থেকে বিক্রি হয়ে গেলেও এবার তা না হওয়ায় রাস্তার পাশে অস্থায়ী বাজার বসিয়ে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে দেখা গেছে কৃষকদের।
মিষ্টি কুমড়া চাষি মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, সময়মতো বীজ না পাওয়ার কারণে চাষাবাদ করতে দেরি হওয়ায় ফলনও দেরিতে হচ্ছে, সাথে সাথে শীতকালীন সবজি বাজারে আসার কারণে মিষ্টি কুমড়ার দাম কমে গেছে।
কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন, ‘আমি ৪৫ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছিলাম। আগে জমিতে বসেই মণপ্রতি ১ হাজার ৪০০ টাকা দাম পেয়েছি, এখন ৫০০ টাকা দরেও বিক্রি করতে পারছি না।’
আরেক কৃষক মো. হুসেন আলী বলেন, আমি ৫৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। জমিতেই পাইকার ১ হাজার টাকা মণ দাম বলেছিল। পরবর্তীতে ৭০০ টাকা দিতে চেয়েছে। তিনি বলেন, এখন জামিতে বোরো ধান চাষ করব তাই মিষ্টি কুমড়া জমি থেকে তুলে রাস্তায় নিয়ে এসেছি। বিক্রি করতে পারছি না, এখানে প্রতি মণ ৪০০-৫০০ টাকা মণ বলছে।
পাইকার মো. মাসুদ বলেন, আগে ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ, এখন ৫০০ টাকা। বেচাকেনা হয় না, চাহিদা খুব কম। এলাকা থেকে কিনে ঢাকায় নিয়ে যাই। বিক্রি করতে পারি না।
আরেক পাইকার বলেন, অধিক পরিমাণ উৎপাদন ও একসঙ্গে জমি থেকে উত্তোলনের কারণে দাম কমে গেছে। আগে মিষ্টি কুমড়া ক্রয় করেছি ১ হাজার ৪০০ টাকার উপরে। এক বিঘা জমির মিষ্টি কুমড়া ক্রয় করতাম ৬০-৭০ হাজার টাকায়, সেটা এখন ২০-২৫ হাজার টাকা।
ভোলাহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সুলতান আলী বলেন, বাজারে সবজির জোগান বেশি হওয়াতে সকল সবজির দাম কমে গেছে। ভোলাহাটে মিষ্টি কুমড়ার উৎপাদন ভালো হওয়াতে তুলনামূলক দাম কমেছে। আগামী ছয় মাস পর্যন্ত পরিপক্ব মিষ্টি কুমড়া ভালো থাকবে। মিষ্টি কুমড়া সংরক্ষণ রেখে কয়েক মাস পর বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যাবে।