সব নির্বাচনের খবর সংগ্রহে মোটরসাইকেল ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ আট দফা দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। রবিবার রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) ব্যানারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য স্মারকলিপি দেন তারা। এতে সাংবাদিকরা গত ১২ এপ্রিল জারি করা সংবাদ সংগ্রহে ইসির নীতিমালা প্রত্যাখ্যানের কথাও তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলোÑ
১. নির্বাচন কমিশনের অনুমতিপ্রাপ্ত কার্ডধারী সাংবাদিকদের কোনো ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষে (গোপন ভোটকক্ষ নয়) প্রবেশ করতে কারো কোনো অনুমতির প্রয়োজন পড়বে না। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সাংবাদিক কার্ডই চূড়ান্ত অনুমতিপত্র হিসেবে বিবেচিত হবে। কেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি নেয়ার বিষয়টি বাতিল করতে হবে।
২. নির্বাচন কাভারেজে সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে। দেশের এমন অনেক ভোটকেন্দ্র আছে যেখানে গাড়ি প্রবেশ করতে পারে না।
৩. ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচারে ইসির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিক এই যুগে তাৎক্ষণিক সংবাদ প্রচার করতে হয়। এছাড়া সরাসরি সম্প্রচার হলে ভোট নিয়ে প্রশ্ন অনেকাংশেই কমে যাবে।
৪. ভোটকক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাচনী এজেন্ট বা ভোটারদের সাক্ষাৎকার নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। নির্বাচনের সঙ্গে যে ব্যক্তিরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকেন, তাদের বক্তব্য ছাড়া যে কোনো মাধ্যমের প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ হবে।
৫. জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংবাদিক নাম ব্যবহার করে রাজনৈতিকভাবে ডিসি (জেলা প্রশাসক) অফিস কিংবা নির্বাচন অফিস থেকে কার্ড সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। সাংবাদিক কার্ড যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে।
৬. কোনো গণমাধ্যমকর্মী অহেতুক দীর্ঘক্ষণ কোনো ভোটকক্ষে অবস্থান করেন না, যদি না ভোটে কোনো ধরনের অনিয়মের চিত্র তাদের কাছে ধরা পড়ে। নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, একটি ভোটকক্ষে ১০ মিনিটের বেশিক্ষণ অবস্থান করা যাবে না। সাংবাদিকদের কাজ সময় দিয়ে বেঁধে দেয়ার বিষয়টি বাতিলের দাবি জানানো হলো।
৭. প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা কিংবা আলোচিত প্রার্থীরা যখন ভোট দিতে যান, তখন ছবি-ফুটেজ কিংবা সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকেন টেলিভিশন ও পত্রিকার সংবাদকর্মীরা। এ ক্ষেত্রে অনেকজন সংবাদকর্মীকে একত্রে কোনো কক্ষে প্রবেশ করতে হয়। এছাড়া সাধারণত কোনো ঘটনা ছাড়া একাধিক গণমাধ্যমকর্মী একটি কেন্দ্রে প্রবেশও করেন না। তাই দুজনের বেশি একটি কক্ষে ঢুকতে পারবেন না বলে নীতিমালায় যে ধারাটি রয়েছে, তা বাতিল করা উচিত বলে মনে করি আমরা।
৮. সর্বশেষ, ভোটের দিন নির্বাচনে ইন্টারনেটের ব্যবহার সচল রাখতে নির্দেশনা দেবে নির্বাচন কমিশন।
আরএফইডির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই করা স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, সংবিধানের ৩৯ (১) অনুচ্ছেদের (খ) উপ-অনুচ্ছেদে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। এই নিশ্চয়তা কোনো শর্তযুক্ত নয়। সুতরাং কোনো বিধি-বিধান, আইন এই স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না। আর যদি তা করা হয় তাহলে তা হবে সংবিধানের লঙ্ঘন।