বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চুক্তি অলিম্পিক কমিটির সঙ্গে

23

ক্রীড়াবিদদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী অ্যাথলেটদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, বিভিন্ন শারীরিক কার্যকলাপ নিয়ে সচেতনতামুলক প্রচারণা চালাবে সংস্থাটি। পাশাপাশি, আগামীতে টোকিও অলিম্পিক গেমস আয়োজনে ক্রীড়াবিদদের সুরক্ষার বিষয়ে আইওসি’কে পরামর্শ দেবে তারা। বৈশ্বিক মহামারি করোনার থাবায় আটকে গেছে পুরো ক্রীড়াঙ্গন। অদৃশ্য এই ভাইরাসের কারণে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বিশ্বব্যাপী নানা ভাবে চেষ্টা করেও, এখনো কার্যকর কোন কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার করতে পারেনি কেউ।

ছোট্ট এক ভাইরাসের তাই নাকাল পুরো বিশ্ববাসী। মৃত্যুর মিছিল থামাতে চেষ্টার কোনো কমতি করছেনা দেশগুলোর সরকার। ব্যতিক্রমও আছে কিছু। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে ইতোমধ্যেই জার্মানিতে মাঠে গড়িয়েছে ফুটবল। ইউরোপের অন্য দেশগুলোও প্রস্তুতি নিচ্ছে মাঠে ফেরার। ক্ষেত্র বিশেষে শর্ত দিয়ে লকডাউন শিথিল হয়েছে অনেক জায়গাতেই। কিন্তু, বাঁচার মন্ত্র জানা নেই কারোই। এসবের মাঝেই, আগামী অলিম্পিক গেমস নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ক্রীড়া বিশ্বে। জাপান সরকার খুব একটা আগ্রহ না দেখালেও, আগামী বছরেই গেমস আয়োজনে প্রস্তুতি নিচ্ছে অলিম্পিক কমিটি। ভ্যাক্সিন আবিষ্কার না হলে, গেমস আয়োজন সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে এখনই কোন মন্তব্য করতে রাজি নয় থমাস বাখ। তবে প্রয়োজন হলে যে কোন সিদ্ধান্ত নিতেই কুণ্ঠাবোধ করবেনা আইওসি সভাপতি।আইওসি সভাপতি বলেন, আপনারা জানেন, আমরা এখনো গেমস থেকে এক বছর দূরে দাঁড়িয়ে আছি। তাই এখনই এগুলো নিয়ে খুব বেশি ভাবনার জায়গা নেই।

এই মুহূর্তে আমি চাইলেও, কেউ আমাকে সঠিক কোন পরিকল্পনা দিতে পারবেনা। তবে, আমি আশ্বাস দিচ্ছি যদি প্রয়োজন হয় তাহলে যে কোন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেও আমরা প্রস্তুত আছি। আমি সদস্য দেশগুলোকে বলবো, নিজেদের প্রস্তুত রাখুন। অযথা সমালোচনা না করে, নিজেরা নিরাপদে থাকুন। অ্যাথলেটদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা আমাদের প্রধান প্রায়োরিটি। এখানে কোন আপস করা হবে না। আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এছাড়া, নতুন চুক্তিতেও এ বিষয়টাকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

সবার সবুজ সংকেত পেলেই কেবল, আমরা গেমস নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। এদিকে অ্যাথলেটদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই সমঝোতা চুক্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা অ্যাথলেটদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দিকে আরো মনোযোগী হতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সুস্থ জীবনধারা, শারীরিক বিভিন্ন কার্যকলাপ এবং সক্রিয় বিনোদনের মাধ্যমে ভালো থাকার টোটকা দেয়াই এর মূল লক্ষ্য। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আদহানোম ঘেব্রেইসাস বলেন, এটা এমন এক মহামারি, যার কোন প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক আমরা এখনো বানাতে পারিনি। তাই বলে তো, নিশ্চয়ই আমরা বসে থাকবোনা।

আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ অবস্থায় মাঠের খেলাধুলা শুরু করা বেশ কঠিন, এটা আমার জানা আছে। কিন্তু উপায়ও তো নেই। এটা যাদের রুটি-রুজি তাদেরকে তো আমরা দিনের পর দিন আটকে রাখতে পারিনা। এজন্য আপাতত আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের দিকেই মনোনিবেশ করছি। আইওসি’র সাথে আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। পুরো বিশ্বের সব অ্যাথলেটদের কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেবো আমরা। আশা করি, সবাই একসাথে একতাবদ্ধ হয়ে লড়াই করলে, করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদেরই জয় হবে। ২০২১ এর ২৩ জুলাই, টোকিও গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজনের সময় নির্ধারণ করা আছে।