বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ রজব, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on আগস্ট ২৫, ২০২৪ by

বিশেষ সমালোচক পুরস্কার জিতল ‘দাঁড়কাক’

তরুণ বাংলাদেশি স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা জায়েদ সিদ্দিকীর স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘দাঁড়কাক (র‌্যাভেন)’ এ বছরের ১০ম শিমলা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ সমালোচক পুরস্কার (স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড) জিতেছে। ফেস্টিভ্যালটি গেল ১৬ থেকে ১৮ আগস্ট ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী শিমলার ঐতিহাসিক গ্যাইতি থিয়েটার কালচারাল কমপ্লেক্সে আয়জিত হয়, যেখানে নির্মাতা জায়েদ সিদ্দিকী উপস্থিত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। উৎসবের শেষদিন গত (১৮ আগস্ট) সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কারজয়ী সকল নির্মাতাদের পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানটির প্রধান অতিথি হিমাচল প্রদেশের গভর্নর শিভ প্রতাপ শুকলা। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ‘দ্য ব্যান্ডিট কুইন’খ্যাত বলিউড অভিনেত্রী সীমা বিশ্বাস। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হিমাচল সরকারের ভাষা ও সংস্কৃতি অধিদপ্তরের প্রধান এবং ফেস্টিভ্যাল পরিচালক পুষ্পরাজ ঠাকুর। প্রতিবছর ভারতের অন্যতম এই ফেস্টিভ্যালটি যৌথভাবে আয়োজন করে হিমালায়ান ভেলোসিটি, হিমাচল প্রদেশের ভাষা ও সংস্কৃতি অধিদপ্তর (ল্যাক) এবং ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। প্রখ্যাত লেখক শহিদুল জহিরের একটি ছোটগল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘দাঁড়কাক’ সিনেমার সংলাপ ও চিত্রনাট্য রচনা করেছেন পরিচালক জায়েদ সিদ্দিকী। এটি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ওপর নির্ভরশীল একজন বয়স্ক মানুষ তোরাব শেখের অস্তিত্ব সংকটের গল্প বলে। অর্থ উপার্জন করে না দেখে সে এই সংসারে অপ্রয়োজনীয় বোধ করে। তার অজান্তে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেওয়ায় সে এবার ক্ষুব্ধ হয়, অপমানিত বোধ করে। তোরাব শেখ সিদ্ধান্ত নেয় স্বেচ্ছায় হারিয়ে যাওয়ার। সে চলে গেলে তারপরই বাকিরা বুঝতে পারে সংসারে তার অস্তিত্ব কতটা কাক্সিক্ষত। একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় সিনেমাটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি অভিনয় করেছেন বিশিষ্ট অভিনেতা আমিনুর রহমান মুকুল, ইকবাল হোসেন, টুনটুনি সোবহান, ফজলুল হক, তাহুয়া লাবিব তুরা ও এ.বি.এম. সাঈদুল হক। এছাড়াও অভিষেক হয়েছে জেরিন আক্তার শিমুল ও আখলাকুজ্জামান খানের। সিনেমার পরিচালক নিজেই প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন। নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন সাইয়্যিদ শাহজাদা আল কারীম, ইসরাত জাহান, সাকিব ইফতেখার ও হাসিব শাকিল। চিত্রগ্রহণ করেছেন হাসনাত সোহান। সম্পাদনা ও শব্দ পরিকল্পনা করেছেন সুজন মাহমুদ। লাইন প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন মশিউর রহমান, শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন জায়েদ সিদ্দিকী ও তাসনিম নিশো। নিশো একই সঙ্গে প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া সহকারী পরিচালক ছিলেন আখলাকুজ্জামান খান ও মল্লিকা রায়। সহকারী শিল্প নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছেন দুর্জয় রায় এবং পোশাক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন তানজিনা ইসলাম। পুরস্কার পাওয়ার আনন্দ প্রকাশ করে পরিচালক বলেন, ‘চলচ্চিত্রটি বিগত ২ বছর ধরে শিল্পী ও কলাকুশলীদের আন্তরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে এই পর্যায়ে এসেছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পাওয়া খুবই উৎসাহজনক এবং আনন্দের।’ উল্লেখ্য, সিনেমাটি এখন পর্যন্ত আটটি দেশে ১০টি চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হয়েছে। হোম রিফ্লেকটর প্রোডাকশন্স’র ব্যানারে এটি নির্মিত হয়েছে এবং দুটি স্বনামধন্য পরিবেশক কোম্পানি ইতোমধ্যে সিনেমাটির গ্লোবাল পরিবেশক হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এর একটি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক স্ক্রিনএক্সকোপ এবং আমেরিকাভিত্তিক সেভেন পামস এন্টারটেইনমেন্ট।

About The Author

শেয়ার করুন