বিশৃঙ্খলার জন্য এক দিন বন্ধ থাকার পর কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কূটনীতিক ও বেসামরিকদের সরিয়ে নিতে সামরিক ফ্লাইট চলা ফের শুরু হয়েছে। কাবুল বিমানবন্দরের রানওয়ের ওপর থেকে কয়েক হাজার লোককে সরানোর পর মঙ্গলবার সকালে সামরিক ফ্লাইটগুলো চলা শুরু করে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সোমবার কাবুল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় থাকা হাজার হাজার আফগান বিমানবন্দরটিতে জড়ো হয়ে বেপরোয়াভাবে আফগানিস্তানের রাজধানী ছাড়ার প্রস্তুতি নেওয়া সামরিক বিমানগুলোতে উঠে পড়ে। বিমানবন্দরের টারম্যাক দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকা বিশৃঙ্খল লোকজনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে থাকা মার্কিন সেনারা শূন্যে গুলি ছুড়ে। একপর্যায়ে সেখানে পাঁচ জন নিহত হয়; তবে তারা গুলিতে না ভিড়ের চাপে পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন তা পরিষ্কার হয়নি। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বিমান উড্ডয়নের পর সেটির নিচের দিকে অবস্থান নেওয়া দুই ব্যক্তি পড়ে যান, তারা বিমানবন্দরের কাছের বাড়িগুলোর ছাদে পড়ে মারা যান। এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মার্কিন সেনারা দুই ‘অস্ত্রধারী’ আফগানকে হত্যা করেছে, তারা বিমানবন্দরে থাকা জনতার দিকে গুলি ছুড়েছিল। রয়টার্সএমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার বিমানবন্দরটি থেকে সব ধরনের সামরিক ও বেসামরিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানান মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের এক মুখপাত্র। তিনি বলেন, বিমান চলাচল আবার কখন শুরু হবে তা পরিষ্কার নয়। মার্কিন সেনারা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশ ছেড়ে পালাতে মরিয়া আফগানদের চাপ সামলাতে তারা হিমশিম খাচ্ছে। কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ এখনও মার্কিন সেনাদের হাতে রয়েছে। তারা বিদেশি কূটনীতিক ও বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে কাবুল ছাড়ার বিষয়টি দেখভাল করছেন। সেখানে থাকা ২৫০০ মার্কিন সেনার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ১০০০ সেনার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। মঙ্গলবার পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। “কালকে যারা এখানে ছিল তাদের অনেকেই বাড়িতে ফিরে গেছেন,” পশ্চিমা এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা এমনটি বলেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তারপরও বিমানবন্দরের দিক থেকে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল বলে রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক জানিয়েছেন, কিন্তু তখন কাবুলের অন্যান্য এলাকার রাস্তাগুলোর পরিস্থিতি শান্তই ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। তালেবান রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এখন দেশটি থেকে পশ্চিমা বাহিনীগুলোর বের হওয়ার একমাত্র উপায় এই বিমানবন্দর। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রস উয়িলসন এক টুইটার বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি এখনও কাবুল বিমানবন্দরে আছেন এবং দূতাবাসের কর্মাকর্তাদের নিয়ে হাজার হাজার মার্কিন ও আফগান নাগরিককে সহায়তা করছেন।