বিলগুলোতে মাছ চাষের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে : জেলা প্রশাসক

14

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩ পালন উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে মৎস্য চাষ-সংক্রান্ত সামগ্রিক তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হয়।
‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’- প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য অফিস এই সংবাদ সম্মেলন কর্মসূচির আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন। এ সময় তিনি নিরাপদ মাছ উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন- জেলার বড় বড় বিল ও জলাশয়গুলোকে খনন করা গেলে মাছ চাষ বৃদ্ধির পাশাপাশি পানির ওপর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। তাছাড়া সারাবছর পানি থাকার কারণে বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচেও দেয়া যাবে। এজন্য একটি প্রকল্প প্রয়োজন হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ।
জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে মৎস্য চাষ-সম্পর্কিত সামগ্রিক তথ্য উপস্থাপন করেন জেলা মৎস্য অফিসের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। উপস্থাপনায় তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় মৎস্যচাষি রয়েছে ৬ হাজার ৫৫৪ জন, মৎস্যজীবী রয়েছেন ১০ হাজার ৭৮৫ জন, সরকারি পুকুর রয়েছে ৩ হাজার ১৬টি এবং বেসরকারি ৮ হাজার ৫৩৩টি। বিল আছে ৬৩টি, প্লাবনভূমি ৬৯টি, খাল আছে ৩৫টি এবং নদী আছে ৪টি। তিনি আরো জানান, জেলায় মোট মাছের চাহিদা হচ্ছে ২৫ হাজার ৭৬৭ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ২০ হাজার ৮৬১ মেট্রিক টন মাছ। ঘাটতি থাকছে ৪ হাজার ৯০৬ মেট্রিক টন। তিনি আরো জানান, জেলার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১০ হাজার ৭৮৫ জন। তাদের মধ্যে থেকে ১ হাজার ৬২৪ জনকে ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে শুরু করে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত আয়বর্ধক উপকরণ দেয়া হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, জনবল ঘাটতি নিয়েই কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এতে কাজ কিছুটা ব্যাহত হলেও ঠিকমতো সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।
অন্যদিকে শিবগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্যাপন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের হল রুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জানানো হয়, মৎস্য সেক্টরের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বদ্ধ জলাশয়ে মৎসচাষ সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ, পরিবেশবান্ধব মাছচাষ সম্প্রসারণ, উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনামাছ অবমুক্তকরণ ও মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপনসহ মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি ও নিরাপদ মাছ সরবরাহের জন্য মৎস্য অধিদপ্তর নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হায়াত। অন্যান্যের মধে উপস্থিত ছিলেনÑ উপজেলা মৎস্য অফিসার ড. মো. আবু বক্কর ছিদ্দিক, উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল ইসলামসহ অন্যরা।
বক্তারা বলেন, আমরা সচেতন হলেই মাছের প্রজননের বিস্তার ঘটানো যেতে পারে। তাছাড়া অপরিপক্ব মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে হবে। সকলের সহযোগিতার ফলেই এটা করা সম্ভব বলে জানান বক্তারা।
গোমস্তাপুর প্রতিনিধি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে মৎস্যসম্পদের সুরক্ষা ও সমৃদ্ধি অর্জনে মৎস্য অধিদপ্তরের গৃহীত কার্যক্রম বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুমিতা খাতুন। তিনি ৭ দিনব্যাপী উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন গৃহীত কর্মসূচিগুলো তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে সুমিতা খাতুন বলেন, গোমস্তাপুর উপজেলায় ১ হাজার ৬২৬টি পুকুর রয়েছে। এতে মাছের উৎপাদন হয় ৪ হাজার ৮১৪ মেট্রিক টন।
ভোলাহাট প্রতিনিধি জানান, জেলার ভোলাহাটে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্যাপন উপলক্ষে সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা মৎস্য দপ্তরে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেনÑ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ওয়ালিউল ইসলাম। এ সময় স্থানীয় সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।