চাঁপাইনবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘী বর্ডার (এন-৬) জাতীয় মহাসড়কটি যথাযথ মান বজায় রেখে প্রশস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সঙ্গে বাঁকগুলোকে সরলীকরণ করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য এরই মধ্যে একটি প্রস্তাবনাও (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল- ডিপিপি) পাঠানো হয়েছে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সড়কটি উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়ক। সড়কটি ১৯৯৬-৯৭ সালে নির্মিত হয়। সড়কটি উত্তরবঙ্গের সাথে জেলাশহর চাঁপাইনবাবগঞ্জের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। সড়কটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর সংযোগকারী সড়ক। এই সড়ক দিয়ে মালবাহী ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে, এ বন্দর দিয়ে সারা বছরই কৃষিপণ্য, পাথরসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করা হয়। এছাড়া ভারত-বাংলাদেশ সীমানা সংযোগকারী সড়ক হওয়ায় এবং বিজিবি ক্যাম্প থাকায় সীমান্ত রক্ষার জন্য বিজিবি সদস্যরা এ সড়কটি নিয়মিত ব্যবহার করেন। সড়কটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার সাথেও সংযোগকারী একমাত্র সড়ক। এই ব্যস্ততম সড়কটির গড়প্রস্থ ৬.৫০ মিটারের কম হওয়ায় দুটি ভারি গাড়ি পাশাপাশি চলাচল করা বা একটি অপরটিকে অতিক্রম করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়েছে, এই সড়কের উভয় পাশে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, সারের গোডাউন, বাজার বিদ্যমান থাকায় অসংখ্য ভারি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ইত্যাদি যাতায়াত করে থাকে। দিনে দিনে সড়কটির ওপর দিয়ে যানবাহনের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। এজন্য সওজ সড়ক নেটওয়ার্ক এ সড়কটির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই গুরুত্ব বিবেচনায় সড়কটির ৩১.০৩ কিলোমিটার সড়কাংশে নতুন পেভমেন্ট নির্মাণ (বাঁকসরলীকরণ), বিদ্যমান পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, মজবুতিকরণ, সার্ফেসিং, ইন্টারসেকশন নির্মাণ, বিদ্যমান কালভার্ট প্রশস্তকরণ, ড্রেন নির্মাণ, রক্ষাপ্রদ কাজ, সাইন, সিগন্যাল স্থাপন এবং বাজার অংশে ২০ কিলোমিটার প্রশস্ততায় রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরিন ঝিনুক বলেনÑ কাশিনাথপুর-দাশুড়িয়া, নাটোর-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘী বর্ডার (এন-৬) জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে একটি ডিপিপি পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯২৯৪.০৪ লাখ টাকা (সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়ন)।
তিনি আরো বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় বারঘরিয়া থেকে সোনমসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত ১০.৩ মিটার প্রশস্তকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বহালাবাড়ী ও রসুলপুর মোড় এলাকার বাঁক সরলীকরণ করা হবে। প্রস্তাবনাটি বর্তমানে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আশা করা হচ্ছে প্রকল্পটি দ্রুত সময়ের মধ্যেই আলোর মুখ দেখবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়কটি দিয়ে ভারি ট্রাক, ট্রাক-মিনি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, বাস, মিনিবাস থেকে শুরু করে নসিমন, করিমন, ভুটভুটি, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও হাজার হাজার মোটরসাইকেল চলচল করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এসব যানবাহনের সংখ্যা। সবচেয়ে ভয়ঙ্করভাবে চলাচল করে ট্রলি। রাস্তার ধারণ ক্ষমতার বেশি যানবাহন হওয়ায় হরহামেশায় ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা। প্রাণ যায় অনেক মানুষের। বহু মানুষ পঙ্গু হয়েছে এরই মধ্যে। এমন অবস্থায় সম্প্রতি কানসাট ও শিবগঞ্জে এই মহাসড়কটি ৪ লেন করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের গৃহীত প্রস্তবনাটি যত দ্রুত আলোর মুখ দেখবে ততই উপকৃত হবেÑ এমনটাই প্রত্যাশা এই সড়ক ব্যবহারকারীদের।