Last Updated on এপ্রিল ৪, ২০২৪ by
বারঘরিয়া-সোনামসজিদ মহাসড়ক অবশেষে আলোর মুখ দেখল
আগামী অর্থবছরে দৃশ্যমান হবে কাজ
অবশেষে আলোর মুখ দেখল ‘কাশিনাথপুর-দাশুড়িয়া-নাটোর-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘী বর্ডার (এন-৬) জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প।
প্রকল্পটি এরই মধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ-একনেক সভায় পাস হওয়ায় দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হয়েছে। এখন নিয়োগ করা হবে প্রকল্প পরিচালক। তারপর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এবং তারপরই দরপত্র আহ্বান করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১.৮৯ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হবে বলে সওজ সূত্রে জানা গেছে।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল-ডিপিপি) বলা হয়েছিল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামজিদ সড়কটি উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়ক। সড়কটি ১৯৯৬-৯৭ সালে নির্মিত হয়। ঘনবসতি বেষ্টিত সড়কটি সারাদেশের সঙ্গে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। সড়কটি সোনামসজিদ স্থলবন্দর সংযোগকারী সড়ক। এই সড়ক দিয়ে মালবাহী ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। এ বন্দর দিয়ে সারা বছরই কৃষিপণ্য, পাথরসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করা হয়। এছাড়া ভারত-বাংলাদেশ সীমানা সংযোগকারী সড়ক হওয়ায় এবং বিজিবি ক্যাম্প থাকায় সীমান্ত রক্ষার জন্য বিজিবি সদস্যরা এ সড়কটি নিয়মিত ব্যবহার করেন। সড়কটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার সাথেও সংযোগকারী একমাত্র সড়ক। এই ব্যস্ততম সড়কটির গড় প্রস্থ ৬.৫০ মিটারের কম হওয়ায় দুটি ভারী গাড়ি পাশাপাশি চলাচল করা বা একটি অপরটিকে অতিক্রম করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাছাড়া রয়েছে বড় বড় বাঁক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়কটি দিয়ে ভারী ট্রাক, মিনি ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, বাস, মিনিবাস থেকে শুরু করে নসিমন, করিমন, ভুটভুটি, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও হাজার হাজার মোটরসাইকেল চলচল করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এসব যানবাহনের সংখ্যা। সবচেয়ে ভয়ঙ্করভাবে চলাচল করে ট্রলি। রাস্তার ধারণ ক্ষমতার বেশি যানবাহন হওয়ায় এবং সড়কটি অপ্রশস্ত হওয়ায় হরহামেশায় ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা। প্রাণ যায় অনেক মানুষের। বহু মানুষ পঙ্গু হচ্ছে। এমন অবস্থায় কানসাট ও শিবগঞ্জে এই মহাসড়কটি ৪ লেন করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন এলাকাবাসী।
এমন অবস্থায় সওজ সড়ক নেটওয়ার্কে এ সড়কটির গুরুত্ব অপরিসীম বিবেচনায় প্রায় ৩১ কিলোমিটার সড়কাংশে ২টি বাঁক সরলীকরণ, সড়ক কালভার্ট প্রশস্তকরণ, ২টি ইন্টারসেকশন ও রিজিড পেভমেন্ট বাস-বে ও ট্রাক লেন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বহালবাড়ী ও অন্যটি বেকির মোড়ের বাঁক দুটি সরলীকরণ করা হবে। এছাড়া ট্রাক লেন নির্মাণ করা হবে কয়লাবাড়ী এলাকায়। এই ট্রাক লেন নির্মাণ করা হলে রাস্তার ওপর আর ট্রাক পার্কিং করার দারকার হবে না। নতুন পেভমেন্ট নির্মাণ (বাঁকসরলীকরণ), বিদ্যমান পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, মজবুতিকরণ, সার্ফেসিং, ইন্টারসেকশন নির্মাণ, বিদ্যমান কালভার্ট প্রশস্তকরণ, ড্রেন নির্মাণ, সাইন, সিগন্যাল স্থাপন এবং বাজার অংশে ২০ কিলোমিটার প্রশস্ততায় রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ করা হবে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে যানবাহনসহ জনসাধারণের চলাচল সহজ হবে এবং এর ফলে এই সড়কে দুর্ঘটনা কমতে পারে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরিন ঝিনুক বলেনÑ সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১.৮৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বারঘরিয়া থেকে সোনমসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত ৩৫ ফুট প্রস্থে উন্নীত হবে। এছাড়া বহালাবাড়ী ও বেকির মোড় এলাকার বাঁক সরলীকরণ করা হবে। সোনামসজিদে একটি গেট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। কতদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবে প্রকল্পটি একনেকে পাস হলো। এখন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করার পালা। এরপর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে। আশা করা হচ্ছে, আগামী অর্থবছরেই প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান হবে।