শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪ by

বাফুফেতে সালাউদ্দিন যুগের অবসান

শেষ পর্যন্ত ফুটবল থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের চারবারের আলোচিত সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। গত শনিবার বিকেল চারটার কিছু সময় আগে বাফুফে ভবনে এসে তিনি এই ঘোষণা দেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর থেকেই ফুটবলঙ্গনের নানা দিক থেকে ওঠে সালাউদ্দিন হঠাও দাবী। সমর্থক, সাবেক ফুটবলার, সংগঠক থেকে শুরু করে অনেকেই তার পদত্যাগ ও সামনের নির্বাচনের অংশ না নেওয়ার দাবী জানায়। যদিও সে সব দাবীর মুখে নিজ বাসায় স্বেচ্ছাবন্দী থাকাবস্থায়ও সালাউদ্দিন বলেছিলেন পদত্যাগ না করার কথা। একই সঙ্গে দিয়েছিলেন পঞ্চম মেয়াদে সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা। তবে সেই ঘোষণায় তিনি থাকলেন না। ৫ আগস্টের পর প্রথম বাফুফে ভবনে এসে দিলেন সরে যাওয়ার ঘোষণা। সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আপনারা জানেন যে আমাদের বাফুফের নির্বাচন ২৬ অক্টোবর। বেসড অন দ্যাট ইলেকশন, কিছু লোকজনের চাওয়া ছিল নির্বাচনটা যাতে পেছায়। এই অনুরোধ বিবেচনায় এনে আমরা ফিফার কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। যার উত্তরও দিয়ে দিয়েছে। যা আপনাদের কাছে দিয়ে দিবো। ফিফা বলেছে নির্বাচন একদিনও পেছানো যাবে না। এটা ফিফার নির্দেশনা। আর আমার ব্যক্তিগতভাবে যে কারণে বসেছি, আমি চার টার্ম আপনাদের সঙ্গে ছিলাম। আমি নিজেকে অনেক বেশি সৌভাগ্যবান মনে করছি যে এই সুযোগ আমার জীবনে এসেছে। এখন যে নির্বাচন ২৬ অক্টোবর হতে যাচ্ছে সেখানে আমি অংশগ্রহণ করবো না। এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এটা আপানাদেরকে জানাতে এসেছি। আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই যে আমার সঙ্গে ১৬ বছর কাজ করার জন্য। এতে অনেক মতে মিল-অমিল হয়েছে, যা হতেই পারে। আমি এসব কিছুই মনে রাখছি না। আশা করি আপনারার রাখবেন না। অনেক ধন্যবাদ আপনাদের সমর্থনের জন্য। আশা করবো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের যাতে অনেক উন্নতি হবে। ভবিষ্যতে যাতে আরও ভালোভাবে থাকে। এটলিস্ট আমার একটা মনে খুশি আছে যে, সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমি যেতে পারছি। এটা আমার ব্যক্তিভাবে একটা শান্তির জায়গা। সবাইকে আবারও ধন্যবাদ জানাই।’ উল্লেখ্য ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথমবারের মতো সভাপতি পদে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন সাবেক এই তারকা। এরপর ২০১২, ২০১৬ ও ২০২০ নির্বাচনেও জয়ী হন তিনি। যদিও অভিযোগ আছে, মসনদ ধরে রাখতে তিনি নানা সময় শেখ হাসিনা সরকারের নানা সরকারী সংস্থা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাজে লাগান। এ মাসে সালাউদ্দিনের বয়স হবে ৭১ বছর। ফিফায় নির্বাচন করার বয়সসীমা ৭২ বছর বলেই এবার শেষবারের মতো নির্বাচন করার সুযোগ ছিল তার। তবে নানামূখী চাপের মুখে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দীর্ঘ ১৬ বছরে ফুটবলের কাক্সিক্ষত উন্নতি করতে না পারা সালাউদ্দিন। সম্প্রতি অন্তবর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াও সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানিয়েছিলেন, পরিবর্তন প্রয়োজন ফুটবলেও। ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবকের কাছ থেকে এরকম বক্তব্য পাওয়ার পরই সালাউদ্দিন বুঝে যান, এবার আর কোন শক্তিই তার পক্ষে কাজ করানো সম্ভব নয়। সেটা বুঝতে পেরেই দিলেন নির্বাচন না করার ঘোষণা। সালাউদ্দিনের না থাকা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর এখন ফুটবলঙ্গনে গুঞ্জন কে হবেন ফুটবলের ভবিষ্যতের অভিভাবক? অনেকেই সালাউদ্দিন থাকাবস্থায় নির্বাচনের ইচ্ছে প্রকাশ করেননি। তবে সালাউদ্দিনের নিজে থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা পর হয়তো অনেকেই আগ্রহী হবেন। তবে যিনিই দায়িত্ব নিক, তার জন্য সালাউ্দ্িদনের রেখে যাওয়া ফুটবলকে কক্ষে ফেরানো হবে বড় চ্যালেঞ্জ।

About The Author

শেয়ার করুন