Last Updated on জানুয়ারি ১, ২০২৫ by
বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন তারেক রহমান : হারুন
ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সাবেক এমপি হারুনুর রশীদ বলেছেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে নতুনরূপে গড়ে তুলব। তিনি (তারেক রহমান) শান্তিপূর্ণভাবে দেশে ফিরবেন এবং বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হারুনুর রশীদ বলেন- বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্রদল হচ্ছে গৌরবান্বিত অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের পূর্বে শেখ মুজিবুর রহমান সকল রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাংলাদেশে একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েমের নামে দুঃশাসন কায়েম করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্যদিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি অনুভব করেছিলেন বাংলাদেশকে যদি সা¤্রাজ্যবাদের হাত থেকে রক্ষা করতে হয় তাহলে এদেশের ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদ জাগ্রত করতে হবে। সেই আকাক্সক্ষা নিয়ে সরাসরি তারই অনুপ্রেরণায় যাত্রা শুরু হয়েছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের। ছাত্রদল প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষাঙ্গনের নৈরাজ্য দূর করেছিল, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করেছিল, দেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল ছাত্রদল, স্বৈরাচার এরশাদ সরকারকে উৎখাৎ করেছিল ছাত্রদল, ছাত্রদল জাতীয়বাতাবাদী শক্তির ভ্যানগার্ড।
নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গত ১৮ বছর শিক্ষাঙ্গনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিকভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। বাকশালী কায়দায় কর্তৃত্ববাদী শাসকরা দেশে গুম, খুন অরাজকতার মধ্যদিয়ে দেশের সম্পদ পাচার করে বাংলাদেশের ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। আজ তার অবসান ঘটিয়েছি আমরা। আমরা জাতীয়তাবাদী দল ও অঙ্গসংগঠন শপথ নিবো, দেশে কোনো ষড়যন্ত্র আমরা বরদাস্ত করব না। বাংলাদেশের মানচিত্র, পতাকা নিয়ে কোনো ধরনের চক্রান্ত বরদাস্ত করব না, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে প্রাণের বিনিময়ে হলেও রক্ষা করব, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসী কর্মকা- আমরা ঘৃণা করব, যারা এসব কর্মকা- পরিচালনা করবে তাদের ব্যাপারে আমরা সতর্ক থাকব, আমরা বাংলাদেশকে রক্ষা করব, গণতন্ত্রকে রক্ষা করব, গণতন্ত্রকে আমরা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব, যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন বাংলাদেশকে এই উপমহাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে অন্যতম একটি দেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলব।
হারুন বলেনÑ আমাদের বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে, বিপুল জনসংখ্যা রয়েছে, আমাদের দেশের মানুষের কর্মস্পৃহা রয়েছে, শুধু দরকার একটি সুযোগ, একটু সহযোগিতা। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে নতুন করে নতুনরূপে গড়ে তুলব। তিনি বলেনÑ আমাদের নেতা তারেক রহমান শান্তিপূর্ণভাবে দেশে ফিরবেন এবং বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন।
জেলাশহরের আব্দুল মান্নান সেন্টু মার্কেটের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ও সহসভাপতি মিম ফজলে আজিম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ওমর ফারুক রানা, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদমান সাকিব লিপু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোতাহার আলী আজগর।
এর আগে শহরের পাঠানপাড়ায় হারুনুর রশীদের বাসভবনের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। রালিটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে মিলিত হয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যানারে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
অন্যদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বঞ্চিত নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছেন। এছাড়া উপজেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়।
উপজেলা ও রহনপুর পৌর বিএনপির কমিটির বঞ্চিত নেতাকর্মী আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন রাধানগর ইউনিয়ের বিএনপির সাবেক নেতা মোজাম্মিল হক। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রহনপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র তারিক আহমদ।
অন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে বক্তব্য দেন- রহনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতা শফিকুল ইসলাম, রাধানগর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জাকির খান, গোমস্তাপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান বাবু, রহনপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জুয়েল আলী, সাবেক ছাত্রদল নেতা জাহিদ হাসান মুক্তা, যুবনেতা আবদুল্লাহ, সাফিরুল ইসলামসহ অনেকে।
এ সময় বঞ্চিত নেতাকর্মীদের গণস্বাক্ষর নেয়া হয়।
সভায় বক্তারা বিএনপির একটি বৃহত্তর অংশকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এছাড়া, সভা শেষে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের গণস্বাক্ষর সংবলিত দুটি আবেদন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বক্তব্য শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও গোমস্তাপুরের মরহুম বিএনপি নেতা বাইরুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত এবং বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
About The Author
