বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে : কাদের

23

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদ- কার্যকর করার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  শনিবার জাতীয় শোক দিবসে বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতিকে আশ্বস্ত করতে চাই, বঙ্গবন্ধুর সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরো জোরদার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন করতে হবে, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, পরাজিত শক্তি যখন নিজেরা দমাতে পারেনি, শত চেষ্টাতেও যারা পরাস্ত হয়েছিল স্বাধীন বাংলার প্রাণ প্রাচুর্যের কাছে। তখনই তারা প্রগতির পথ রুদ্ধ করতে ইতিহাসের সেই ঘৃণ্য কালো অধ্যায় রচনা করেন জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। ওবায়দুল কাদের বলেন, মুক্তিকামী বাঙালির সেই পুরনো ক্ষত জাগ্রত হবার দিন ১৫ আগস্ট। ভারাক্রান্ত এই দিবসের শুরুতেই শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয় অবিসংবাদিত এই নেতাকে।
এদিকে দুপুরে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেনন ওবায়দুল কাদের।
সেখানে বক্তব্যে তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নামটি অক্ষত রেখে চিরায়ত পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালনার লক্ষ্যেই ১৫ আগস্টের হত্যাকা- ঘটানো হয়েছিল। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগস্ট হত্যার পরিকল্পনাকারীদের পরামর্শে খুনি মোশতাক কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাতির পিতার হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিল। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশসহ সব অবৈধ ও অসাংবিধানিক বিষয়কে বৈধতা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রেখেছিল। এরপর প্রায় দুই যুগ বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার বন্ধ ছিল।’
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এভাবে জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করেছিলাম। কিন্তু আবারো ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে বিচারের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বহুল প্রতীক্ষিত বিচার সম্পন্ন হয়। মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত কয়েকজন খুনি বিদেশে পলাতক থাকায় সবার মৃত্যুদ- কার্যকর হয়নি। অনেকেরই মৃত্যুদ- কার্যকর হয়েছে। যে পাঁচজন বিদেশের মাটিতে পালিয়ে রয়েছে, তাদের মৃত্যুদ- কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সহযোগিতা চেয়েছি। আমাদের প্রয়াস এবং কূটনীতির উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এবারের শোক দিবসটি আমাদের কাছে অধিক তাৎপর্যময় কারণ, এ বছর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। যারা ভুয়া জন্মদিনে কেক কাটত, এবার না কেটে জাতিকে এক অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিয়েছে। এটি তাদের শুভবুদ্ধির উদয় বলে আমরা ধন্যবাদ জানাই। এ সময় তিনি ১৫ আগস্টে নিহত সবার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকিরের সভাপতিত্বে সভায় তথ্যপ্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, ইউএস-বাংলা গ্রুপের সিইও লে. জে. মো. মইনুল ইসলাম (অব) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বক্তৃতা করেন।