দশকের পর দশক ধরে চাষ করা খাস জমির মালিকানা ও ঋণ মওকুফসহ বেশ কিছু দাবিতে মুম্বাইয়ের রাস্তায় ফের বিক্ষোভ দেখিয়েছে মহারাষ্ট্রের লাখো কৃষক। বৃহস্পতিবারের এ বিক্ষোভে কৃষকরা খরা আক্রান্ত এলাকার জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়েছে বলেও জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আগামী বছরের সাধারণ নির্বাচন ও আসছে মাসগুলোতে বেশ কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিশাসিত পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে ফের কৃষক বিক্ষোভ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কপালের ভাঁজ বাড়িয়ে দিতে পারে, বলছেন পর্যবেক্ষকরা। ২০১৪-র নির্বাচনে কৃষকদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশেই মোদীকে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে গ্রামীণ অর্থনীতির পতন সেই সমর্থন কমিয়ে দেবে বলেই ধারণা অনেকের। মুম্বাইয়ের রাস্তায় কৃষকরা বনের যেসব জমি তারা দীর্ঘদিন ধরে চাষ করে আসছেন সেগুলোর মালিকানা এবং খরা আক্রান্ত এলাকার জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে। মহারাষ্ট্রের এ রাজধানীতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অনেকগুলো বড় কোম্পানির সদরদপ্তর। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে আমরা ওই জমিগুলো চাষ করছি, কিন্তু ওগুলোর মালিকানা নেই আমাদের, বলেন কৃষক রেমসিং পাওয়ারা। চলতি বছরের মার্চের কৃষকবিক্ষোভেও ছিলেন তিনি। সেবার রাজ্য সরকার জমির সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কৃষকদের শান্ত করেছিল। সমস্যার সমাধানে সরকারের প্রতিশ্রুতির আট মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেল, কিন্তু কিছুই হয়নি। বনবিভাগের কর্মকর্তারা এখনও আমাদের হয়রানি করে,” বলেন পশ্চিম ভারতের ৫ একর জমি চাষ করে জীবনধারণ করা পাওয়ারা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কৃষকদের সিংহভাগই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার। তারা কৃষি ঋণ মওকুফের পাশাপাশি শস্য, দুধ ও অন্যান্য ফসলের বাড়তি দাম নির্ধারণেরও দাবি জানান। গত বছরের জুনে মহারাষ্ট্র সরকার কৃষকদের ৩৪০ বিলিয়ন রুপি ঋণ মওকুফের ঘোষণা দিয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত সব কৃষকের উপকারে আসেনি বলে দাবি কৃষক সংগঠনগুলোর। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সংগঠনের নেতারা গতকাল বৃহস্পতিবার পরের দিকে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস ও রাজ্য সরকারের অন্যান্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন বলে এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে। মার্চের বিক্ষোভের সময় ফড়নবীসই ছয় মাসের মধ্যে কৃষকদের জমির অধিকার ও অন্যান্য সংকট মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সমস্যাগুলোর সমাধানে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি না দেওয়া পর্যন্ত সরকারের বিরুদ্ধে মুম্বাইয়ে আমাদের প্রতিবাদ চলবে, বলেছেন বিক্ষোভকারীদের নেতা প্রতিভা সিন্ধে।