ফারাক্কার ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে ভারত
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে সবকটি গেট খোলা হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা, মহানন্দা নদীর পানি সোমবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেভাবে বাড়েনি। পদ্মা নদীর পানি ২ সেন্টিমিটার বেড়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের নিউজ১৮ জানায়, প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ বেড়েছে। তবে স্বস্তির বিষয় এখনো নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা ব্যারাজ এলাকায় পানি বিপদসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ‘ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সব সময় অ্যালার্ট রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে তাতে ১০৯টি গেটের সবকটি খুলে না দিলে ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।’
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দিন বলেন, গত কয়েকদিন থেকে সামান্য পানি বাড়ছে। ফারাক্কার ১০৯টি গেট খুলে দিলে তো আরো বেশি পানি বাড়ত। পানি যখন বেশি বাড়েনি তাহলে কি করে বলব যে ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে।
তবে বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন। সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন গৌড় বাংলাকে বলেন- নদীগুলোয় এখনো বিপৎসীমার প্রায় দুই মিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। তবু আমরা বন্যা মোকাবিলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা, কন্ট্রোল রুম খোলা, মেডিকেল টিম গঠন করা, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ডাক্তার নিয়োজিত রাখা, উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নৌকা রাখা এবং সেনাবাহিনী রাখাসহ সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সোমবার বিকেল ৩টায় পদ্মা নদীর পাঁকা পয়েন্টে পানির স্তর ছিল ২০.৫০ মিটার। এ নদীর বিপৎসীমা হচ্ছে ২২.০৫ মিটার। বিপৎসীমার ১.৫৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে মহাননন্দায় পানির স্তর ছিল ১৮.৪৯ মিটার। এ নদীর বিপৎসীমা হচ্ছে ২০.৫৫ মিটার। বিপৎসীমার ২.০৬ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মহানন্দা নদী।