দৈনিক গৌড় বাংলা

মঙ্গলবার, ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

প্রকাশ পাচ্ছে আবুল হায়াতের আত্মজীবনী ‘রবি পথ’

কিংবদন্তি অভিনেতা-নির্মাতা আবুল হায়াত। অভিনয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক ৬০ বছরের মতো। শুধু অভিনয়ই নয় নির্মাণ ও লেখালেখিতেও তিনি বেশ সক্রিয়। আগামী শনিবার তার ৮০তম জন্মদিন। দিনটি সামনে রেখে ভক্তদের জন্য সুখবর দিলেন শক্তিমান এই অভিনেতা। জানালেন নিজের আত্মজীবনী লেখার কাজ শেষ করেছেন তিনি। এখন চলছে প্রচ্ছদ আঁকা ও প্রকাশনার প্রস্তুতি। ১৯৪৭ সালের কথা। মুর্শিদাবাদের একটি গ্রামের আলপথ। দুই পাশে ধানখেত। কয়েকটি পালকিতে চড়ে যাচ্ছেন একটি পরিবারের সদস্যরা। তারপর ট্রেনে চেপে তারা চলে আসেন এই বাংলায়, চট্টগ্রামে। সংস্কৃতিমনা বাবার সান্নিধ্যে চার বছর বয়সী রবির (আবুল হায়াতের ডাকনাম) মনে গেঁথে যায় নাটক। মঞ্চে অমলেন্দু বিশ্বাসের নাটক দেখে ঠিক করেন, এটাই করবেন। তা-ই করলেন সারা জীবন। এবার ৮০ বছরে জীবনের ভ্রমণটা একমলাটে পাওয়া যাবে। নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখে আত্মজীবনীর নাম রেখেছেন ‘রবি পথ’। লেখাপড়ায় ভালো ছিলেন আবুল হায়াত। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ১৯৬২ সালে বুয়েটে ভর্তি হন। বুয়েটে পড়ার সময় শেরেবাংলা হলে থাকতেন। এরপর বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ১৯৬৭ সালে পাস করে ১৯৬৮ সালেই ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী পদে যোগ দেন। বুয়েটে পুরকৌশলে পড়াশোনা শেষ করে প্রথমে ওয়াসা, পরে আন্তর্জাতিক সংস্থার পরামর্শক হিসেবে তিনি লিবিয়া ও লাওসে দীর্ঘদিন কাজ করেন। ‘রবি পথ’ বইয়ে এসব সময়ের একটা প্রতিফলন থাকবে, এমনটাই জানিয়েছেন অভিনেতা। আত্মজীবনীতে ঠিক জীবনের কোন কোন অংশ তুলে ধরছেন আবুল হায়াত এ বিষয় নিয়েও গণমাধ্যমে কথা বলেছেন এ অভিনেতা। তিনি বলেন ‘বইটি লিখতে আমি অনেক সময় নিয়েছি, যা প্রায় ১০ বছর। কারণ এটি আমি গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। বইতে আমার জন্ম থেকে এই পর্যন্ত যেগুলো আমার মনে হয়েছে বলা দরকার, সেগুলোই লিখেছি। আশা করছি, সবকিছু মিলিয়ে আমার পুরো যাত্রাপথ জানা যাবে এতে।’ আত্মজীবনী ‘রবি পথ’ প্রকাশিত হবে সুবর্ণ থেকে, এটি আবুল হায়াতের ছোট মেয়ে নাতাশার বান্ধবীর প্রকাশনা সংস্থা। ‘রবি পথ’-এর প্রচ্ছদ করছেন আবুল হায়াতের বড় মেয়ে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী ও চিত্রকর বিপাশা হায়াত। এখন পরিবার নিয়ে বিপাশা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। বাবার আত্মজীবনীর প্রচ্ছদ মেয়ে আঁকছেন, এটাও দারুণ আনন্দের বলে জানালেন আবুল হায়াত। আত্মজীবনী নিয়ে আবুল হায়াত আরও বলেন, ‘নিজের ভেতর একটা চাহিদা থাকে যে এই জীবনে আমি কী করলাম না করলাম। ভেতর থেকে একটা আকাক্সক্ষা আসে। আমার এটা ডায়েরি লেখার মতোই। এটা শুধু লেখার জন্যই লেখা, শুরু করেছিলাম ওইভাবে। শুরুতে মাথার মধ্যে একটা চিত্রকল্প এঁকেছিলাম।’ ১৯৪৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ভারতের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন আবুল হায়াত। ১৯৪৭ সালে ট্রেনে চেপে পরিবারের সঙ্গে চলে আসেন চট্টগ্রামে। মাত্র ১০ বছর বয়সে মঞ্চে ওঠেন অভিনয়ের জন্য। যে অভিনয়ের সঙ্গে এখনো নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন অভিনেতা।

About The Author