পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ

7

পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এর আগে পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নিয়ে গঠিত বোর্ডের ষষ্ঠ সভায় এই মজুরি নির্ধারণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান।
এর আগে বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মজুরি বোর্ডের সভাকক্ষে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শুরু হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান ও বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি ছিলেন সিরাজুল ইসলাম রনি। অন্যদিকে মালিকদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ, নিরপেক্ষ সদস্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন এবং শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য ও জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ।
সভায় শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকার প্রস্তাব করেন। অপরদিকে মজুরি বোর্ডে পোশাক কারখানার মালিকদের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান নূন্যতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। উভয়পক্ষ প্রস্তাবনায় তাদের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুয়ায়ী মালিক ও শ্রমিকপক্ষ মিলে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজকের যে ঘোষণা সেটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই করা হচ্ছে। ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে।
১৯৮৪ সালে পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে মজুরি ৫৭০ থেকে বাড়িয়ে ৯৩০ টাকা করা হয়। ২০০৬ সালে ন্যূনতম মজুরি ১ হাজার ৬৬২ টাকা করা হয়। তারপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসে ২০১০ সালে ন্যূনতম মজুরি ৩ হাজার টাকা করে দেয়। ২০১৩ সালে করে ৫ হাজার ৩০০ টাকা। সবশেষ ২০১৮ সালে তা ৮ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
এদিকে ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণ করার খবর ছড়িয়ে পড়লে গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরে আন্দোলন শুরু করেন পোশাকশ্রমিকরা। পরে তা আশুলিয়া, সাভার ও ঢাকার মিরপুরে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক জায়গায় শ্রমিকরা ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যায়ক্রমে পাঁচ শতাধিক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছে গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্পরক্ষা জাতীয় মঞ্চ, গার্মেন্টস ওয়াকার্স অ্যালায়েন্স, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।