চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনসাধারণের মধ্যে পুষ্টি সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে কাজ করছে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি। সংস্থাটির রুরাল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্ট (আরএমটিপি)-এর আওতায় পুষ্টি বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা হচ্ছে। এ কাজে সহায়তা করছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ।
সচেতনতামূলক এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে মাঠপর্যায়ে পুষ্টি সচেতনতা ও শিখন কার্যক্রম বিষয়ক এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার পলশা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হাসিব হোসেন। সূচনা বক্তব্য দেন প্রয়াসের পরিচালক মুখলেছুর রহমান।
অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- পিকেএসএফের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ড. আকন্দ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, পিকেসএফের ব্যবস্থাপক ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ আরএমটিপি প্রজেক্টের কপিল কুমার পাল, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মাসুম, নিরাপদ খাদ্য অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন, ইফাদের প্রোগ্রাম ম্যনেজার এমএস মারিয়েল জিমারম্যান ও কমিউনিকেশন অফিসার ফারহানা উর্মি, প্রয়াস হসপিটালের মেডিকেল অফিসার ডা. সুফিয়া খাতুন তমা। সভা সঞ্চালনা করেন প্রয়াসের কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম ও জুনিয়র অফিসার মোমেনা ফেরদৌস।
ড. আকন্দ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, পুষ্টিকর খাদ্যের জন্য পয়সার দরকার হয় না। আমাদের সবাইকে জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যে খাবার খাই, সেটা বেশিরভাগ নষ্ট হয় রন্ধন প্রক্রিয়ায়। তাই রান্নায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করা যাবে না। তিনি বলেন, আমাদেরকে জেনে-বুঝে খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। আমাদের কীটনাশকবিহীন খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। জৈব সার ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন করার জন্য আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে যেন রান্না করার সময় খাদ্যের গুণাগুণ নষ্ট না হয়।
ইফাদের প্রোগ্রাম ম্যানেজার এমএস মারিয়েল জিমারম্যান বলেন, ইফাদের পক্ষ থেকে আমি এখানে থাকতে পেরে খুবই খুশি। আমি আরো খুশি এই কারণে যে, এখানে নারী-পুরুষ সবাই এসেছেন। কারণ পরিবারের যে খাদ্য তালিকা, সেটা কিন্তু এই দুজনের সিদ্ধান্তের মধ্যেই হয়ে থাকে। আমরা আমাদের খাদ্য তালিকার যে চর্চা, সেটা টিকিয়ে রাখব। তিনি আরো বলেন, ইফাদ, পিকেএসএফ ও প্রয়াস সবারই পুষ্টিবিষয়ক কার্যক্রম রয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে হাসিব হোসেন বলেন, প্রয়াস এই মাটির একজন সন্তান, প্রয়াসের যোগ্যতা, দক্ষতা এবং আপনাদের সমর্থন, আপনাদের ভালোবাসার কারণে এই জায়গায় আসতে পেরেছে। প্রয়াসের যে দক্ষতা আছে, সেটা বাছাই করে নিয়েছে ইফাদ, পিকেএসএফ; এটা আমাদের জন্য বড় পাওয়া। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের মধ্য দিয়ে আমরা আগামী দিনকে আমাদের মতো করে জয় করব। পুষ্টিগুণসম্পন্নের মধ্য দিয়ে আমাদের চলাফেরা আগামীতে সদৃঢ় হবে। আশা করি আমরা সবাই সফল হবো।
এর আগে পলশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালি শেষে নিরাপদ উপায়ে খাদ্য উৎপাদন বিষয়ে স্থাপিত স্টল পরিদর্শন করেন অতিথিবৃন্দ। স্টলে গর্ভবতী ও নবজাতক বাচ্চাদের মেডিকেল চেকআপ ও পথ্য ব্যবস্থাপনা সেবা দেয়া হয়। পরে উপস্থিত সকলের মধ্যে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে পুষ্টিবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতে নাটক ও গম্ভীরা পরিবেশন করেন প্রয়াস ফোক থিয়েটার ইনস্টিটিউটের শিল্পীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পলশা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসলেম উদ্দিন, প্রয়াসের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আবুল খায়ের খান, কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক মু. তাকিউর রহমান, ফিরোজ আলম, প্রয়াস হসপিটালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মুক্তাদির আহমেদ, প্রয়াসের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক শাহাদাৎ হোসেন, এসইপি প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক কৃষিবিদ জহুরুল ইসলাম, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক বাশার উদ্দিন, তুহিন উদ্দিন, আরএমটিপি প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক রিফাত আমিন, প্রাণিসস্পদ কর্মকর্তা ডা. রাজিন বিন রেজাউল, কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম, অফিসার শাহরিয়ার শিমুল, ইউনিট-১ ব্যবস্থাপক ওজিউর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ।