Last Updated on মার্চ ১৫, ২০২৫ by
পা হারানো রাকিব বেঁচে থাকার সংগ্রাম চলিয়ে যাচ্ছেন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার রাজারামপুর মহল্লার এক পা হারানো রাকিবুল ইসলাম জীবন সংগ্রামে হিমসিম খাচ্ছেন। স্ত্রী সন্তানদের মুখো এক মুঠো ভাত তুলে দিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এ দুরবস্থায় সমব্যথি পরিবার ও প্রতিবেশীরাও। তিনি রাজারামপুর মন্ডল পাড়া মহল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোরহুম নজরুল ইসলামের ছেলে।
জানা যায়, এক নি¤œবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি জন্মের সময় স্বাভাবিক শিশুর মতোই তার জন্ম হয়। বরেন্দ্র অঞ্চলে জমিতে কাজ করার সময় কোদালের আঘাতে ডান পা কেটে যায় এবং ফুলে ইনফেকশন হয়ে যায়। দীর্ঘ দিন চিকিৎসা শেষে ডান পায়ের হাটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়। বাম পাঁয়ের বুড়ো আঙুলসহ পাশের আঙুল টাও ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে অপারেশন করেন। বাড়ি ফিরে এসে অন্ধকার দেখতে শুরু করেন। কি করবেন, কিভাবে পরিবারের ছয় সদস্যের সংসার পরিচালনা করবেন। তিনি চার মেয়ে সন্তান এর জনক। তার এ দুঃসময় এগিয়ে আসেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রবাসী এক প্রতিবেশী। তিনি তাঁর চলাচলের জন্য একটা হুইল চেয়ার ও কিছু পুঁজি দেন বাড়িতে দোকান করার জন্য। এভাবেই চলছে রাকিব এর সংসার।
বাবা মুক্তিযোদ্ধা হবার সুবাদে ২০১৬ সালে সরকার একটা বাড়ি নির্মাণ করে দেন। তাঁর মা বেঁচে থাকায় একসাথে ওই বাড়িতে বসবাস করেন। সমস্যা হচ্ছে বাড়ির ল্যাট্রিন দূরে থাকায় রাকিবকে কষ্ট করে সেই ল্যাট্রিনেই যেতে হয়। বর্তমানে তাঁর যে শারীরিক অবস্থা চলাফেরা করা ভীষণ কষ্টকর। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কাছে সরকারি ভাবে ঘর সংলগ্ন একটা ল্যাট্রিন নির্মাণ করে দেবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এই সন্তানের কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা রওশন আরা বেগম। তিনি জানান মুক্তিযোদ্ধার যে ভাতা পান তিনি, এর ভিতর খুব সামান্য অংশ দু ছেলেকে দিয়ে নিজে জীবন যাপন করেন। তিনি বলেন সরকারি ভাবে জরুরি ভিত্তিতে রাকিবের জন্য ঘর সংলগ্ন একটা ল্যাট্রিনের নির্মাণের আবেদন করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোছা. তাছমিনা বেগম বলেন, তিনি খোঁজ খবর নিয়েছেন বিষয়টি আসলেই কষ্টের। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রকার সহযোগিতাসহ তার পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
রাকিবুল ইসলাম একটি ল্যাট্রিন নির্মাণের জন্য বিত্তশালীদের নিকট সাহায্যের আবেদন করেছেন।