পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষে অ্যাডভোকেসি

7

প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারী বৃদ্ধি করি, প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি নিশ্চিত করি-এ প্রতিপাদ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অ্যাডভোকেসি সভা ও প্রেসব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ২৪-২৯ নভেম্বর পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এ-সময়
ইবাদত মনে করে জানসাধারণকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মীদের প্রতি আহবান জানান জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক। গত কাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক এ জেড এম নুরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন এসএফএম খায়রুল আতাতুর্ক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা তথ্য কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন সদর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম।
জেলা প্রশাসক বলেন-আগে সবারই বাড়িতে ডেলিভারি হতো, এখন আমরা সচেতন হয়েছি। আমরা অবশ্যই বাড়িতে ডেলিভারি করবো না বা বেসরকারি ক্লিনিকেও করবো না, সরকারি হাসপাতালে ডেলিভারি করবো। প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে বড় সরকারি হাসপাতাল আছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর হাসপাতাল বাংলাদেশের অন্য সকল হাসপাতালের চেয়ে ভাল। আমাদের হাসপাতাল সম্প্রতি ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। আগের তুলনায় সেবার মান বেড়েছে। আমাদের সন্তানেরা বাড়ীতে হবে না সরকারি হাসপাতালে হবে। আমাদের দরজার কাছে আছে কমিউনিটি ক্লিনিক, যেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই এটাকে মনিটরিং করেন। তিনি চান আমরা সকলে এখান থেকে সেবা নিয়, সেখানে ত্রিশ রকমের ওষুধ দেওয়া হয় এবং ডেলিভারির সুযোগ সুবিধা আছে। আমরা সেখানে যাব সেবা নিব। ২৪-২৯ নভেম্বর স্পেশাল প্রচারণা চালাব মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবো। যারা মাঠে কাজ করেন, প্রত্যেক ওর্য়াডে একজন করে লোক আছে স্বাস্থ্য বিভাগের এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের, আপনারা যেভাবে যত কাছে যেতে পারেন যাবেন। আপনারা ইবাদত মনে করে কাজটা করবেন, তাদেরকে সঠিক পরামর্শ ও সেবাটা দিবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিভিল সার্জন এসএফএম খায়রুল আতাতুর্ক বলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবছর ৪২ হাজার ৪’শ ১৭ জন রেজিষ্ট্রারভুক্ত গর্ভবতী রয়েছে। আর শিশু মৃত্যুর হার ২৮ ভাগ এবং মাতৃমৃত্যুর হার ১৭৬ এবং এই হারটা চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটু বেশি। এজন্য একটা প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে যেখানে ৩ হাজার ধাত্রীকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। যাতে তারা নিরাপদ ডেলিভারি করতে পারে। জেলায় ১৭ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চার উপজেলায় চারটি এবং কানসাটে একটি। গত মাসের ২৪ অক্টোবর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গোমস্তাপুরের একজনকে পুরস্কৃত করেছেন তিনি এবছরে সবচেয়ে বেশী ডেলিভারি করেছেন। সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তিনি। আমারা চাই প্রত্যেকটা মা যেন বেঁচে থাকে। আমারা মায়েদেরকে উৎসাহিত করবো তারা যেন পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করে। পেটে বাচ্চা আসলে যেন কমপক্ষে চারবার তারা কোন ডাক্তার বা নার্স এর কাছে গিয়ে চেকআপ করেন।
অ্যাডভোকেসি সভার শুরুতেই পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য খাতে ২০১৭ সালে অর্জিত সাফল্য তুলে ধরেন জেলার পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুস সালাম। এসময় তিনি বলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কল সেন্টার ১৬৭৬৭ এই নম্বরে ফোন করে বিনামূল্যে যে কোনো পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সেবা পেতে পারেন। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার ২০০৭ সালের ৫৫.৮% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮ সালে ৬২% হয়েছে। এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারী হার ২০০৯ সালের ৩০% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮ নালে ৪৭% হয়েছে। উল্লেখ্য আগামী ২৪ থেকে ২৯ নভেম্বর থেকে এই সেবা ও প্রচার সপ্তাহ চলবে।
গোমস্তাপুর প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষে প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুন্নেসা বাবলী। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আদম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক গোলাম সারোয়ার, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী ইউসুফ আলী প্রমূখ। সভায় জানানো হয়, আগামী ২৪ নভেম্বর হতে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হবে।