Last Updated on আগস্ট ২৭, ২০২৪ by
পদ্মায় ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি ৭ সেন্টিমিটার ভাঙনে অনেকেই সরিয়ে নিচ্ছে ঘরবাড়ি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের নদীগুলোয় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত সোমবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ সেন্টিমিটার। অন্যদিকে মহানন্দায় পানি বেড়েছে ৫ সেন্টিমিটার এবং পুনর্ভবা নদীতে বেড়েছে ১ সেন্টিমিটার। তবে আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী পদ্মায় বিপৎসীমা হচ্ছে ২২.০৫ মিটার। গত ১৮ আগস্ট পানির উচ্চতা ছিল ২০.৭৭ মিটার, ১৯ আগস্ট ২০.৭৩ মিটার, ২০ আগস্ট ২০.৬২ মিটার, ২১ আগস্ট ২০.৪৯ মিটার, ২২ আগস্ট ২০.৪০ মিটার, ২৩ আগস্ট ২০.৪০ মিটার, ২৪ আগস্ট ২০.৪৪ মিটার, ২৫ আগস্ট ২০.৪৫ মিটার, ২৬ আগস্ট ২০.৪৮ মিটার এবং মঙ্গলবার ছিল ২০.৫৫ মিটার।
অন্যদিকে মহানন্দা নদীর বিপৎসীমা হচ্ছে ২০.৫৫ মিটার। গত ১৮ আগস্ট পানির উচ্চতা ছিল ১৮.৭৪ মিটার, ১৯ আগস্ট ১৮.৭২ মিটার, ২০ আগস্ট ২০.৬৬ মিটার, ২১ আগস্ট ১৮.৫৫ মিটার, ২২ আগস্ট ১৮.৪৫ মিটার, ২৩ আগস্ট ১৮.৪৬ মিটার, ২৪ আগস্ট ১৮.৪৭ মিটার, ২৫ আগস্ট ১৮.৪৭ মিটার, ২৬ আগস্ট ১৮.৪৭ মিটার এবং মঙ্গলবার পানির উচ্চতা ছিল ১৮.৫১ মিটার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত পুনর্ভবা নদীর বিপৎসীমা হচ্ছে ২১.৫৫ মিটার। গত ১৮ আগস্ট পানির উচ্চতা ছিল ১৮.৮০ মিটার, ১৯ আগস্ট ১৮.৭৭ মিটার, ২০ আগস্ট ১৮.৭২ মিটার, ২১ আগস্ট ১৮.৬২ মিটার, ২২ আগস্ট ১৮.৫২ মিটার, ২৩ আগস্ট ১৮.৫৪ মিটার, ২৪ আগস্ট ১৮.৫৩ মিটার, ২৫ আগস্ট ১৮.৫১ মিটার, ২৬ আগস্ট ১৮.৪৯ মিটার এবং মঙ্গলবার পানির উচ্চতা ছিল ১৮.৫০ মিটার।
এদিকে কয়েকটি এলাকায় পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের পূর্বপাড়ে পদ্মার এপারে পাঁকার ঘাট এলাকায় নদী ভাঙন চলছে। বালুর বস্তা দিয়েও বন্ধ করা যাচ্ছে না ভাঙন। এছাড়াও পাঁকা নারায়ণপুরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন চলছে। এদিকে পদ্মাপাড়ের মানুষ আতঙ্কে নিজেদের বাড়িঘর সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গত সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গের নিউজ১৮’র খবরে বলা হয়। তবে সবকটি গেট খুলে দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত নদীগুলোয় সেভাবে পানি বাড়েনি।
সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের নিউজ১৮’র খবরে বলা হয়, প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ বেড়েছে। তবে স্বস্তির বিষয় এখনো নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা ব্যারাজ এলাকায় পানি বিপদসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পা-ে বলেন, ‘ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সব সময় অ্যালার্ট রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে তাতে ১০৯টি গেটের সবকটি খুলে না দিলে ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।’
এদিকে বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন। বন্যা মোকাবিলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা, কন্ট্রোল রুম খোলা, মেডিকেল টিম গঠন করা, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ডাক্তার নিয়োজিত রাখা, উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নৌকা রাখা এবং সেনাবাহিনী রাখাসহ সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে বলে সোমবার জানিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন।