দৈনিক গৌড় বাংলা

নির্ধারিত দিন থেকেই শুরু হলো ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের যাত্রা

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কথা রেখেছে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। সোমবার অর্থাৎ ১০ জুন নির্ধারিত দিন থেকেই আম পরিবহণ শুরু করেছে।
বিকেলে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনে আম ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনটি আসে এবং ছেড়ে যাবার আগে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুল ওদুদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. তাছমিনা খাতুন, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক আহম্মেদ হোসেন মাসুম, প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুল হক, রাজশাহী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ের স্টেশনমাস্টার ওবাইদুল্লাহসহ অন্যরা।
উদ্বোধনের পর ১ হাজার ৮৪৫ কেজি আম নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে যায় ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রহনপুর, আমনুরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে আমগুলো রাজধানীতে পাঠানোর জন্য বুক করেন আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা। প্রথমদিন রাজস্ব আসে ২ হাজার ৭৫৬ টাকা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এই ট্রেন। ৬ লাগেজের মাধ্যমে ২৮ দশমিক ৮৩ মেট্রিক টন আম পরিবহণ করা যাবে। যাত্রাপথে রহনপুর স্টেশন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, আব্দুলপুর, ঈশ্বরদী, পোড়াদহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও ভাঙ্গা স্টেশনসহ মোট ১৫টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি নেবে বিশেষ এই ট্রেন। আম ও পশু পরিবহণকারী ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ২টা ১৫ মিনিটে। এ বছর যমুনা সেতুর পরিবর্তে পদ্মা সেতু দিয়ে রাজধানীতে পৌঁছবে ট্রেনটি।
এ নিয়ে আম পরিবহনের জন্য পঞ্চমবারের মতো ট্রেনটি চালু করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি আম পরিবহণে ভাড়া লাগবে ১ টাকা ৪৭ পয়সা, রাজশাহী থেকে ১ টাকা ৪৩ পয়সা, পোড়াদহ থেকে ১ টাকা ১৯ পয়সা, রাজবাড়ী থেকে ১ টাকা ৭ পয়সা, ফরিদপুর থেকে ১ টাকা ১ পয়সা এবং ভাঙ্গা থেকে ৯৮ পয়সা।
এছাড়া ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে এবারো কোরবানি পশু পরিবহণ করা হবে। আগামী ১২ জুন থেকে ১৪ জুন মোট ৩ দিন এই ট্রেনে পশু পরিবহণ করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এবারের ওয়াগন ভাড়া বেড়েছে ২ হাজার ৯১০ টাকা। প্রতিটি ওয়াগনে পশু পরিবহণের জন্য ভাড়া দিতে হবে ১৪ হাজর ৭৩০ টাকা। গতবার ভাড়া ছিল ১১ হাজার ৮২০ টাকা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৫ জুন থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ৪৬ দিন চলেছে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন। ওই বছর ট্রেনে ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন আম পরিবহন করা হলেও কোরবানির পশু পরিবহণ হয়নি। ২০২১ সালের ২৭ মে থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত চলেছিল ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। ওই বছর ২ হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন আম পরিবহণ করা হয়েছিল। ২০২২ সালের ১৩ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত চলে বিশেষ এই ট্রেন। ওই বছর ১৭৯ মেট্রিক টন আম, ৩৬টি গরু ও ১৬০টি ছাগল পরিবহণ করা হয়। ২০২৩ সালের ৮ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত স্পেশাল ট্রেন চলেছে। এই সময় ৩৮২ মেট্রিক টন আম পরিবহণ করা হয়।
আমাদের গোমস্তাপুর প্রতিনিধি আল মামুন বিশ^াস জানিয়েছেন, আম নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে সোমবার বিকেল ৪টায় রহনপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। প্রথম দিন ট্রেনটিতে ৫১ ক্যারেট আম বুকিং দেওয়া হয়েছে। আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৬ টাকা। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় আমসহ অন্যান্য ফল, শাকসবজি ও ডিম এই ট্রেনে ঢাকা যাবে।
এদিকে সাধারণ জনগণ, চাষি ও ব্যবসায়ীরা ট্রেনটি চালু হওয়ায় বেশ খুশি হয়েছেন। তারা কম খরচে ঢাকায় মালামাল পরিবহন করতে পারবেন। তবে আরো আগে ট্রেনটি চালু হওয়ার দরকার ছিল বলে তারা জানান।
রহনপুর রেলওয়ের স্টেশনমাস্টার শহীদুল ইসলাম বলেন, ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে কোনো যাত্রী পরিবহণ করা হবে না। এই স্টেশন থেকে ১ হাজার ২০ কেজি আম তোলা হয়েছে। আয় হয়েছে ১ হাজার ৫৬ টাকা।

About The Author