চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় আম উৎপাদনকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসসহ কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা। সোমবার সকাল ১০টায় নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কেন্দুয়ায় রফিকুল ইসলামের আমবাগানে এ মতবিনিময় করেন তারা।
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় এ মতবিনিয়ের আয়োজন করে নাচোল উপজেলা কৃষি অফিস।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শামসুল ওদুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক ড. বিমল কুমার প্রামানিক, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিথিলা দাস, উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহম্মেদ ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আব্দুন নূর।
কৃষি উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলাম জানান, তার ৩০০ বিঘা জমিতে আমাগান রয়েছে। এর মধ্যে ১০০ বিঘায় গৌড়মতি, ১০০ বিঘায় কাটিমন এবং ১০০ বিঘায় বারি-৪ ও ব্যানানা জাতের আমগাছ রয়েছে। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আম উৎপাদন করেছেন তিনি। এসব আম বিদেশে পাঠাবেন বলে তিনি সরকারের পক্ষ থেকে প্রদর্শনী আমবাগান, সার, ফলের ব্যাগসহ ফ্রুটব্যাগ, নানা কৃষি উপকরণ পেয়েছেন। সে সাথে পেয়েছেন বিশেষ প্রশিক্ষণও। তিনি বলেন, একটি নির্দিষ্ট সময় পর আম পাড়তে হয়। তিনি আরো বলেন, নাচোলে প্রায় ছয়জনেরও বেশি উৎপাদক রয়েছেন, ইতোমধ্যে সুইডেনে প্রায় ৪ হাজার ৪০০ কেজি আম পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা কৃষি অফিস আমাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে একটি মোড়কজাতকরণ কারখানা থাকা দরকার। কারণ দূর থেকে আম এনে মান ধরে রাখা সম্ভব হয় না।
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, বিদেশে আমাদের আমের বিরাট বাজার রয়েছে। এবার আমরা গতবছরের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি অর্থাৎ ৪ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানি করতে চাই। তার জন্য খামারিদের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এতে করে আগামীতে আমরা আম রপ্তানিকারক দেশের শীর্ষ তালিকায় যেতে চাই।
প্রধান অতিথি ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে বাংলাদেশের আমের মান ভালো বলে মনে করেন কৃষিবিদরা। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আমের চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে বিদেশে থাকা প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশী একটা বড় বাজার হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানির পরিমাণ খুব কম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১২ লাখ টনের বেশি আম উৎপাদিত হয়। তবে রপ্তানি কম। বাংলাদেশের ৯৩০ জন কৃষি উদ্যোক্তা এ মৌসুমে বিদেশে রপ্তানির জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আম উৎপাদন করছেন। এ কাজটি হচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের আওতায়।