বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on নভেম্বর ২৪, ২০২৪ by

নাচোলের কৃতী সন্তান আবুল ফজল ইসি হওয়ায় আনন্দে এলাকাবাসী

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার নির্বাচন কমিশনার রবিবার শপথ নিয়েছেন। তাদেরকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
চার নির্বাচন কমিশনারের (ইসি) একজন হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কৃতী সন্তান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
এদিকে আবুল ফজল নির্বাচন কমিশনার হওয়ায় এলাকাবাসী আনন্দে ভাসছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে নাচোল পৌর এলাকার মাস্টারপাড়া মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। নাচোলে ১৯৮৩ সালে স্কুল ও ১৯৮৫ সালে কলেজজীবন শেষে ১৮তম বিএমএ লংকোর্সে তিনি ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৮৮ সালের জুনে কমিশন লাভ করেন এবং সর্ববিষয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ ক্যাডেট হিসেবে সোর্ড অব অনার লাভ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
পেশাগত জীবনে এবং প্রশিক্ষণে আবুল ফজল অসামান্য উৎকর্ষ লাভ করেন। তিনি আর্মি স্টাফ কোর্সে প্রথম হওয়ার পাশাপাশি মাস্টার্স ইন ডিফেন্স স্টাডিজে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ফলশ্রুতিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় স্টাফ কোর্স করার যোগ্যতা লাভ করেন। সেখানে দক্ষতার সাথে ইউএস আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করার পাশাপাশি মাস্টার্স ইন মিলিটারি আর্টস অ্যান্ড সাইন্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ভারতের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ইন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিষয়ে ডিসটিংসনসহ প্রথম শ্রেণীতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সেও সর্বোচ্চ মান প্রদর্শন করেন। তিনের অধিক সামরিক প্রশিক্ষণে প্রথম স্থান অধিকার করায় তিনি এসইউপি বা সেনা উৎকর্ষ পদক লাভ করেন। এছাড়াও তিনি দুইবার তার কমান্ড দক্ষতার জন্য সেনাবাহিনী প্রধানের প্রশংসা লাভ করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে পিএইচডি রিসার্চ ফেলো।
দীর্ঘ ৩৪ বছর ৭ মাসের কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে কমান্ড পর্যায়ে পদাতিক ব্যাটালিয়ান এবং ব্রিগেড কমান্ড, কম্যান্ডান্ট আর্মি সিকিউরিটি ইউনিট অন্যতম। স্টাফ অফিসার হিসেবে তিনি জিএসও-৩ (অপারেশন), ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেড, জিএসও-২ সামরিক অপারেশন পরিদপ্তর এবং কর্নেল জেনারেল স্টাফ ডিজিএফআইয়ে দায়িত্ব পালন করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ এবং স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস’র রণকৌশল শাখায় কর্মরত ছিলেন। আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডক্ট্রিন কমান্ডের ট্রেনিং ডিভিশনের প্রধান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বিদেশে যেসব ট্রেনিং কোর্সে অংশগ্রহণ করেছেন তার মধ্যে রয়েছে- মিড ক্যারিয়ার কোর্স (পাকিস্তান), ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ অফিসার কোর্স (যুক্তরাষ্ট্র), হাইয়ার ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট কোর্স (ভারত) এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স ডিরেক্টরস কোর্স (ইউকে)।
তিনি জাতিসংঘ মিশনে ১৯৯৪-৯৫ সময়ে সোমালিয়ায় এবং ২০০৩-০৪ সময়ে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজল ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, মিরপুর; ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, মিরপুর; ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ, যুক্তরাষ্ট্র এবং কলেজ অব ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট, ভারত’র অ্যালামনাই।
সর্বশেষে তিনি পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং একইসাথে ইরানের তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসে সামরিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

About The Author

শেয়ার করুন