Last Updated on মার্চ ৪, ২০২৫ by
নয় বছরে এবারের ফেব্রুয়ারিতে ছিল সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ
বিগত ৯ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস বায়ুদূষণের দিক থেকে প্রথম স্থানে অবস্থান করছে। এছাড়া ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বায়ুদূষণ আগের ৮ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের গড় মানের তুলনায় শতকরা ১৪ দশমিক ৭৪ ভাগ বেশি ছিল। সদ্য বিদায়ী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ২৬২। এটি ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এর মান ছিল ২৫৮।
ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত ২০১৭ থেকে ২০২৫ সালের অর্থাৎ ঢাকার গত ৯ বছরের বায়ুমান সূচক বা একিউআই’র তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এই তথ্য জানিয়েছে।
ক্যাপস জানায়, গত ৮ বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে ঢাকার ফেব্রুয়ারি মাসের বায়ুমান সূচক গড়ে ২২৭ ছিল, ২০১৮ সালে ২২২ ছিল, ২০১৯ সালে ছিল ২৩৬, ২০২০ সালে ২১৮, ২০২১ সালে ছিল ২৩৮, ২০২২ সালে ২০৮, ২০২৩ সালে ২২৫ এবং ২০২৪ সালে ছিল ২৫৮।
ক্যাপসের গবেষণায় সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আরো দেখা যায়, ঢাকার মানুষ প্রতিনিয়ত দূষিত বায়ু নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করছে। অর্থাৎ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ঢাকার মানুষ একদিনও ভালো বায়ু উপভোগ করার সুযোগ পায়নি। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ৪ দিনের বায়ুমান ছিল অস্বাস্থ্যকর, ১৮ দিনের বায়ুমান ছিল খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৬ দিন ছিল অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ন বায়ুমান। এছাড়া ২০১৭ থেকে ২০২৫ সালের অর্থাৎ ৯ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রাপ্ত ২৫১ দিনের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, গত ৯ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মোট ২৫১ দিনের মধ্যে ৩২ দিনের বায়ুমান ছিল অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বা দূর্যোগপূর্ণ এবং ১৪৪ দিন ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। সেই সঙ্গে গত ৯ বছরে ঢাকার ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বায়ুর মানের দিক থেকে দেখা যায় যে, ২০১৭ সালে ১ দিন, ২০১৮ এবং ২০২৩ সালে ৩ দিন করে, ২০২০ সালে ২ দিন, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে ৪ দিন করে এবং ২০২৪ সালে ৯ দিন অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ণ বায়ুমান ছিল।
ক্যাপসের চেয়ারম্যান ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ২০২২ সাল ছাড়া ২০১৬ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত প্রতিবছরই ফেব্রুয়ারি মাসে গড় বায়ুমান সূচকের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করেছি। গত ৯ বছরে ফেব্রুয়ারি মাসের মোট ২৫১ দিনের মধ্যে ঢাকার মানুষের একদিনের জন্যও ভালো বায়ু উপভোগ করার সৌভাগ্য হয়নি। তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুম আসলেই এই দূষণ ক্রমশ বেড়ে চলে। আমরা গবেষণা করে ঢাকায় বায়ুদূষণের ৫ কারণ দেখেছি। এগুলো বন্ধ করতে হবে। ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য সমন্বয়হীন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজ ৩০ শতাংশ দায়ী। ঢাকার বায়ুদূষণে শিল্পায়নের প্রভাব ও আশপাশের ইটভাটার পাশাপাশি নির্মাণস্থান হলো বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস।