Last Updated on নভেম্বর ১৭, ২০২৪ by
নতুন রেকর্ড, খেলাপি ঋণ এখন ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা
অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার কারণে খেলাপি ঋণে জর্জরিত দেশের ব্যাংকিং খাত। ব্যাংকের বিষফোঁড়া খ্যাত খেলাপি ঋণ দীর্ঘদিন ধরে ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছে। বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি ঋণ প্রথমবারের মতো ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যা বিগত ১৬ বছরে আর্থিক খাতে ব্যাপক কেলেঙ্কারি ও অনিয়মের শিকার হওয়া ব্যাংক সেক্টরের নাজুক অবস্থাকে তুলে ধরেছে।
একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এতদিন স্বার্থান্বেষী মহলগুলোর কারসাজিতে চাপা পড়েছিল খেলাপির প্রকৃত তথ্য। অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিক সময়ে খেলাপি ঋণ আরো বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বা মোট বিতরণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ অনুপাত এটি। গত জুন প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।
২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময়ে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। এরপর ১৫ বছরে আওয়ামী সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে অনিয়ম ও আর অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়। বেনামি আর কেলেঙ্কারি বাড়তে থাকে। ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণও ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে।
আলোচিত সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা। যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর বিদেশী ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা।