অযত্ন অবহেলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে নওগাঁর ঐতিহাসিক দুবলহাটি রাজবাড়ি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে জেলা সদর থেকে মাত্র ৫ কি মি দক্ষিণে অবস্থিত জেলার অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শনটি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৭৯৩ সালে লর্ড কনওয়াল্লিসের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৪ শত ৯৫ টাকা দিয়ে দুবলহাটি এলাকার রাজত্ব পত্তন নিয়ে রাজ্য পরিচালনা শুরু করেন রাজা কৃষ্ণনাথ। কৃষ্ণনাথের কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় মেয়ের ছেলে অর্থাৎ তার নাতি রাজা হরনাথ রায় ১৮৫৩ সালে রাজত্বভার গ্রহণ করেন। রাজা হরনাথ রায়ের সময়ে দুবলহাটি রাজ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটে। সে সময় তিনি দুবলহাটি রাজ প্রসাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, নাট্যশালা নির্মাণ ও প্রজা সাধারণের জলের কষ্ট দুর করার জন্য রাজ প্রসাদের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অনেক পুকুর খনন করেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্তি হওয়ার পর রাজা হরনাথ রায় স্বপরিবারে চলে যান ভারতে। রাজবংশের স্মৃতিস্বরূপ থেকে যায় বিশাল সুরম্য অট্টলিকা দুবলহাটি রাজবাড়ি। পরবর্তীতে এটি সরকারি সম্পদ হিসেবে প্রতœতত্ত¦ বিভাগ নিজেদের অধীনে নেয়। প্রতœতত্ত¦ বিভাগ এটির দায়িত্বভার গ্রহণ করলেও অধ্যবধি তার সুরক্ষা বা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। স্থানীয় প্রভাবশালীরা দিনে দিনে রাজবাড়ির মূল্যবান সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছেন। এভাবে মূল্যবান দরজা জানালা শাল কাঠের তীর লুট করে নিয়ে যাওয়ার পর এখন দালানে ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে যাওয়া শুরু করেছে তারা। এছাড়া ধ্বংসের দারপ্রান্তে এসে দাঁড়ানো রাজবাড়িতে এখন গড়ে উঠেছে অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়া। বসছে মদ, জুয়া, গাঁজার আড্ডা। এ ব্যাপারে দুবলহাটি এলাকাবাসী জানান, দুবলহাটি রাজবাড়িটি নির্মাণ কৌশলে ঐতিহ্যের ছোঁয়া রয়েছে। এটিকে সংস্কার করলে এ রাজবাড়িকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র।