বাংলাদেশ চলতি মৌসুমে ১০ হাজার ৯৩০ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন করে ৬২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড করেছে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবারের হিসাব অনুসারে, চলতি মৌসুমে মোট লবণ উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন। বিগত বছরে লবণ উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ১৮ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন। এই মৌসুমে মোট লবণ চাষকৃত জমির পরিমাণ ৬৬ হাজার ৪২৪ একর, গত বছর ছিল ৬৩ হাজার ২৯১ একর। গত বছরের তুলনায় এ বছর লবণ চাষের জমি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ হাজার ১৩৩ একর। এবার লবণচাষির সংখ্যা ৩৯ হাজার ৪৬৭ জন, যা গত বছর ছিল ৩৭ হাজার ২৩১ জন। গত বছরের তুলনায় লবণচাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ হাজার ২৩৬ জন।
লবণ আমদানি না করে দেশে তা উৎপাদনের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষে চলতি লবণ মৌসুমে এক মাস আগেই চাষিদেরকে মাঠে নামানো হয়। গত মৌসুমে প্রথম উৎপাদন শুরু হওয়ায় চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষে স্বল্পমেয়াদি (১ বছর), মধ্যমেয়াদি (১-৫ বছর) এবং দীর্ঘমেয়াদি (৫ বছরের ঊর্ধ্বে) কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, আধুনিক পদ্ধতিতে লবণচাষিদেরকে অগ্রিম লবণ চাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রশিক্ষণ, লবণ চাষের নতুন এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং সম্প্রসারণ, সহজ শর্তে লবণচাষিদের ঋণ প্রদান, লবণ উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ, প্রকৃত লবণচাষিদের কাছে বরাদ্দকরণ, লবণ চাষের জমির লিজ মূল্য নির্ধারণ, লবণ চাষের জমি সংরক্ষণ, আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদনে প্রদর্শনী ও উৎপাদিত লবণের মান নিয়ন্ত্রণে কারিগরি সহায়তা প্রদান, জরিপ পরিচালনা, লবণ চাষ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ এবং লবণ উৎপাদন, মজুত ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন চলমান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ২০ লাখ মেট্রিক টনের অধিক লবণ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জাতীয় লবণনীতি-২০২২ অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) লবণ শিল্পের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকে। ১৯৬১ সাল থেকে বিসিকের মাধ্যমেই দেশে পরিকল্পিতভাবে লবণ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়।
বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থিত বিসিকের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কর্মসূচি কার্যালয়ের আওতাধীন ১২টি লবণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলার সকল উপজেলায় এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে লবণ চাষের জন্য লবণচাষিদের প্রশিক্ষণ, ঋণ প্রদান এবং প্রযুক্তি সম্প্রসারণসহ সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হয়। খবর বাসস।