দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

5

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বৃহত্তম ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনের পর দেশের শতভাগ জনগণকে বিদ্যুতের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর পায়রায় সোমবার ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব আল্ট্রা-সুপারক্রিটিকাল প্রযুক্তিসহ কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
পরিবেশবান্ধব আল্ট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির সাহায্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ‘মুজিববর্ষে’ দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করে আরেকটি মাইলফলক অর্জন করেছে।
পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দক্ষিণ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার অন্তর্গত রামনাবাদ নদীর পাশে ২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে ১ হাজার একর জমিতে নির্মিত হয়েছে এবং এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে আল্ট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের ১৩তম দেশে পরিণত হয়েছে।
পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ৬৬০ মেগাওয়াট ইউনিটটি ২০২০ সালের মে মাসে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়, ৪০০ কেভি পায়রা-গোপালগঞ্জ পাওয়ার ট্রান্সমিশন ব্যবহার করে এবং দ্বিতীয়টি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উৎপাদন শুরু করে। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও আরেকটি পাওয়ার প্ল্যান্টের নির্মাণ কাজ চলছে এবং সরকারের আরো একটি ১৩২০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং পায়রায় একটি সোলার সিস্টেম পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্ল্যান্টটি তৈরি করছে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল), চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এর মধ্যে একটি ৫০:৫০ যৌথ উদ্যোগ।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রা) লিমিটেড এবং এনইপিসি এবং সিইসিসি’র কনসোর্টিয়াম পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ ইপিসি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার যে দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ এবং ৭৪ শতাংশকে বিদ্যুৎ নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে, বাংলাদেশ এখন ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে, যা ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট ছিল। এর মধ্যে ১ হাজা র১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে এবং ১৯ হাজার ৬২৬ মেগাওয়াট স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে জনসংখ্যার মাত্র ৪৭ শতাংশ বিদ্যুতের আওতায় ছিল। মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ২২০ কিলোওয়াট থেকে ৫৬০ কিলোওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং বিদ্যুতের বিতরণ ক্ষতি ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে।
সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে স্থানীয় চর সোনারামপুর, আশুগঞ্জ, রাঙ্গাবালী, মনপুরা, সন্দ¦ীপ, হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।